বড়াইগ্রামে ইউপি সদস্য কালাম মাতালের তান্ডব, আহত চার নারীসহ ৭ জন

আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২৪, ৯:৪৬ অপরাহ্ণ

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:


নাটোরের বড়াইগ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য মদ্যপ অবস্থায় মাতাল হয়ে চার নারী ও তিন জন পুরুষকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ভুইয়াপাড়া খ্রিস্টান পল্লীতে প্রায় এক ঘণ্টা মদ্যপ ও মাতাল অবস্থায় যাকে কাছে পেয়েছে তাকেই বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকার অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম আবুল কালাম খান ওরফে কালাম মাতাল (৪৫)। সে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম খানের ভাই এবং গোপালপুর মধ্যপাড়ার মৃত আজাহার খাঁ এর ছেলে। এ ব্যাপারে হামলার শিকার আদিবাসী নারী প্রিসিলা মালো বাদি হয়ে রাতেই বড়াইগ্রাম থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

ওই খ্রিস্টান পল্লীর বাসিন্দা দিপালী রোজারিও জানান, রোববার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে কালাম মাতাল মদ পান করে খ্রিস্টান পল্লীর রাস্তায় এক ভ্যানওয়ালাকে আটকিয়ে টাকা চায়। টাকা না দিলে ওই ভ্যানওয়ালার হাতের আঙ্গুল কামড়ে ধরে ও বেধড়ক মারপিট করে। ওই ভ্যানওয়ালাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আবু তাহের (৫০) ও তার ছেলে শাওন প্রামাণিক (২৪)কে মারধর করে আহত করে সে।

মামলার বাদী প্রিসিলা মালো জানান, ওই একই সময় কালাম মাতাল হাতে বাটাম নিয়ে অনেককেই তাড়া করে। এক পর্যায়ে গাছের সাথে ও দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে সে নিজেই রক্তাক্ত আহত হয়। তারপরেও সে বাড়ির ভিতর ঢুকে আমাকে মারধর করে ও শ্লীলতাহানী করে। আমাকে উদ্ধার করতে এসে তার বাটামের আঘাতে রূপালী বৃগেল (৪০) এর ডান হাতের হাড় ভেঙ্গে গেছে। তার হামলায় আহত হয়েছেন ওই এলাকার রায়মন রোজারিও (৬০), আলেকজান্ডার মানিক (২৮) ও দিপালী রোজারিও (৪৫)। আহত সকলেই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য সালমা খাতুন কমলা জানান, কালাম মেম্বারকে স্থানীয়রা ‘কালাম মাতাল’ নামেই চেনে। মদ্যপ অবস্থায় খ্রিস্টান পল্লীতে এসে মারধর করায় একটা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে আতঙ্কে ঘরের দরজা আটকিয়ে দেয়। ওই কালাম মাতাল মাঝে মধ্যেই অতিরিক্ত মদ পান করে এই খ্রিস্টান পল্লীতে অপ্রীতিকর আচরণ করে। তার ভয়ে খ্রিস্টান পল্লীর কেউ কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।

ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক জানান, ইউপি সদস্য কালামকে সকলেই কালাম মাতাল নামেই ডাকে ও চিনে। তার এ ধরনের মাতলামি নতুন কিছু নয়। খ্রিস্টান পাড়াতে এ ধরনের ঘটনা আরও বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে। তার সংশোধন হওয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য কালামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে (কালামকে) মেরে আহত করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শফিউল আযম খান জানান, উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। রাতেই কালাম মেম্বার সহ ৩জনকে আটক করা হয়েছে। কালাম মেম্বারকে পুলিশ হেফাজতে রেখে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সুস্থ হলে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ