বাঘায় পদ্মার পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষার চেষ্টায় চাষিরা

আপডেট: জুলাই ২, ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ণ


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী) :


রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরের প্রায় ৩ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির আবাদ। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে মানিকের চরে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাবুল শেখ নামের এক চাষি।

জানা গেছে, মানিকের চরে শতাধিক পরিবার বসবাস করে। তারা পানিবন্দি হয়ে আছেন। তাদের মতো আরো ১৪টি চরের একই অবস্থা। তাদের আয়ের উৎস কৃষি কাজ। বর্তমানে চারদিকে পানি। জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এরমধ্যে বাবুল শেখ পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

পদ্মার ১৫টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস করে। পরিবার রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। মানিকের চরের প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বাৎসরিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করে।

বাদাম চাষি বাবুল শেখ বলেন, মানিকের চরে ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। এরমধ্যে তিন বিঘার বাদাম উঠাতে পারলেও আরো তিন বিঘার বাদাম উঠানোর আগে পদ্মায় পানি চলে এসেছে। এগুলো উঠানোর চেষ্টা করছি। এর আগে শ্রমিকের খুব সংকটে রয়েছি।

এদিকে রাসেল ভাইপারের ভয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে চায়নি। ফলে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। তবে তিন বিঘা জমির বাদাম এখন পানির নিচে তলিয়ে আছে।
এই চরের আজগর আলী বলেন, আমি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে অন্যের কাছে থেকে জমি ভাড়া নিয়ে দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছি। এরপর পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাগল ও গরু নিয়ে বিপদে আছি। এখন কৃষি কাজ নেই। কোনো কোনো সময়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে, যে টাকা হয় এই দিয়ে কোনো রকম সংসার চলছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর জালাল উদ্দিন বলেন, পদ্মার চরের মধ্যে মানিকেরচর দিয়ারকাদিরপুর, টিকটিকিপাড়াচরসহ চকরাজাপুর ও কালিদাসখালির কিছু অংশ নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এই ওয়ার্ডে পরিবার রয়েছে তিন শতাধিক।

ভোটার রয়েছে এক হাজার ৩৫ জন। চরের মধ্যে আমার ওয়ার্ড নিচু ও অধিকাংশ ফসলি জমি। জমিতে রোপন করা বাদাম ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অধিকাংশ জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, পদ্মার চরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। তারা এখন পানিন্দি রয়েছে। চরের অধিকাংশ বাড়ির পাশে পানি এসেছে। ৪৭৩ হেক্টর জমির মধ্যে অর্ধেক বাদাম উঠাতে পারেনি চাষিরা। সেই বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে অনেকেই পানির নিচে ডুব দিয়ে বাদাম উঠাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, কিছু নামলা বাদাম চাষিরা জমি থেকে উঠাতে পারেনি। সেগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এর সাথে কিছু পাটও রয়েছে। বাদামের চাস হয়েছে ৪৭৩ হেক্টর এবং পাটের আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৮০ হেক্টর।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version