শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ২৯ শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্ভাব্য সময়সূচি অনুযায়ী আম চাষি, বাগানি বা ব্যবসায়ীরা ২৫ মে লক্ষণভোগ ও রাণিপছন্দ আম গাছ থেকে নামিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারবে।
সেই মোতাবেক বুধবার (২৫ মে) থেকে পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারে এসেছে লক্ষণ ভোগ বা লখনা আম। তবে সময় সূচি অনুযায়ী এদিন আরেকটি জাত রাণিপছন্দ আম বাজারে আসার কথা থাকলেও ভালোভাবে পরিপক্ক না হওয়ায় বাজারে নিয়ে আসেনি চাষীরা। সময়সূচি অনুযায়ী, লক্ষণ ভোগ আমের পরেই ২৮ মে আসার সম্ভাবনা রয়েছে খিরসাপাত ও হিমসাগর। তবে আমের দাম যেমনি হোক বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
বুধবার (২৫ মে) সরেজমিনে বানেশ্বর বাজারে গোপাল ভোগ ও বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আমের সাথে লক্ষণভোগ বা লখনা আম বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনে প্রতিমণ লখনা আম সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক আম আসছে।
আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ক্যারেট আম এই বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বাজারে আমের সরবরাহ বাড়ছে। সেই সাথে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী ও চাষীদের মুখে।
আমের আড়ৎদার আকবর আলী জানান, প্রথম দিনেই ৫ থেকে ৬ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ হাজার মণ লক্ষণভোগ আম বাজারে উঠেছে। গোপাল ভোগ, লক্ষণ ভোগ ও বিভিন্ন আটিঁর আমসহ ১০ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ ৫ থেকে ৬ হাজার মণ মন আম বাজারে এসেছে বলে জানান তারা।
বাজারের আসা আম ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, গোপাল ভোগ আমের দাম আজ (বুধবার) বেড়েছে। গত ২২ মে গোপাল ভোগ আম সর্বনি¤œ ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমাদের রাজশাহীর আম এখন কুরিয়ার সার্ভিস ও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিদেশেও যাচ্ছে। এজন্য গোপালভোগ আমের দাম বেড়ে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আম ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানোর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৮ মে খিরসাপাত-হিমসাগর, ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৫ জুন আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই বারি-৪ ও আশ্বিনা, ১৫ জুলাই গোলমতী, ২০ আগস্ট ইলমতি আম চাষিরা গাছ থেকে নামাতে পারবেন।
বাকশাইল থেকে আসা জামাল উদ্দীন নামের আম চাষি বলেন, প্রতিবছর বাগান লিজ নিয়ে থাকি । এবছরও ৯টা বাগান নিয়েছি প্রায় ১০ লাখ টাকা দিয়ে। আজ বাজারে ৫ মণ লক্ষণ ভোগ আম নিয়ে এসেছি। দাম একটু কম। তাপরও ফলন ভালো হয়েছে। এবছর ব্যবসা ভালো হবে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আম নামানো বা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানোর সময়সূচি দেয়ায় খুব ভালো হয়েছে। কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আম পাকাতে বা জোর করে বাজারে বিক্রি করতে পারবে না। তাড়াহুড়ো করার কোন প্রয়োজন নেই। সময়মত আম বাজারে আসবে। মানুষেরা পরিপক্ক সুস্বাদু আমই খাবে।
বাজারে আমের গাড়ি আসলেই গাড়ি ধরে আমগুলো কেটে খাচ্ছিলেন বাজারের শেয়ারে থাকা আড়ৎদাররা। আমের ব্যবসা নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, অপরিপক্ক, ফরমালিনযুক্ত নষ্ট আম বাজারে উঠানো বলে ব্যবসায়ীরা জানাান।
এ সম্পর্কে বানেশ্বর বাজারের এক ইজাদার সুমন শেখ বলেন, আমরা চাই ফরমালিন মুক্ত ও ভেজালমুক্ত আম। যাচাই করার জন্য আমের স্যাম্পল প্রতিটি গাড়িতেই থাকে। আমে কোন সমস্যা থাকলে ধরা পড়ে যাবে। কারণ, তাদের জন্য আমরা বিপদে পড়তে চাই না।