বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষায় এখনও ‘অপ্রস্তুত’ রাবি

আপডেট: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩, ৮:৫৯ অপরাহ্ণ


রাবি প্রতিবেদক:


বিগত কয়েক বছর ধরে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিক নানান ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার আয়োজন করে চলেছে। ঢাবির পর এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিভাগীয় দুই শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর করতে পারেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অধ্যাপকের দাবি, স্বদিচ্ছার অভাব রয়েছে রাবি প্রশাসনের। ফলে কার্যকর হচ্ছে না বিভাগীয় শহরে পরিক্ষা আয়োজন। বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে ভোগান্তি কমে আসবে শিক্ষার্থীদের। গভীরভাবে চিন্তা-ভাবা করারও সময় এসেছে বলে মনে করছেন তারা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ইউজিসি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজনের পর্যাপ্ত সময় পায় নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও জনবল সংকটও একটি বড় কারণ। জালিয়াতি রোধসহ বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে এবছরও বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে পারেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত উপ-কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক ও চূড়ান্ত আবেদনের সময়সীমা, তারিখ, মানবণ্টন, শর্তসমূহ, ফল প্রকাশের সময়, ভর্তি ও ক্লাস শুরুর সময়সহ বিস্তারিত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি সেখানে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ঠিক কোন কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আমি নিশ্চিত নই। তবে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে। শুরুতেই সব বিভাগীয় শহরে না গিয়ে একটি বা দুটি বিভাগে চেষ্টা করা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আরেকটু সিরিয়াসলি চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি।’

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘গত বছরও বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেবার ব্যাপারে প্রশাসন এক প্রকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কোন কারণে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না, তা প্রশাসনই ভালো জানে। আমার মনে হয় সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। গতবারও শিক্ষার্থীদের যে ভোগান্তিগুলো হয়েছে, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে, সেসব অনেকটাই কমে আসতো।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘জনবল সংকটসহ পারিপার্শ্বিক নানা কারণে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। রাবি ভর্তি পরীক্ষার একটি সুনাম রয়েছে; আমরা চাই সেটি অক্ষুণ্ন থাকুক। গত দুই বছরে সংঘবদ্ধ যেসব চক্র ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে জালিয়াতি করার চেষ্টা করছে, তাদের শাস্তির আওতায়ও আনা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই ভর্তি পরীক্ষাকে ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী বছরের ৫ মার্চ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে। প্রাথমিক আবেদন ৮ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ১৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে এবং চূড়ান্ত আবেদন ১ম দফা ২৬ হতে ২৯ জানুয়ারি, ২য় দফা ১ হতে ৩ ফেব্রুয়ারি, ৩য় দফা ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি এবং ৪র্থ দফা ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত করা যাবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ