বিশ্বজিৎ দাস হত্যা : দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়

আপডেট: আগস্ট ৭, ২০১৭, ১:০৩ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গতকাল রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদার (পলাতক)।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথরেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে গত ১৭ জলাই গতকাল রোববার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে দেয় হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন। এদের মধ্যে গতকাল রায়ে রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদন্ড বহাল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, ও মীর মো. নূরে আলম লিমনের (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম ও কাইয়ুম মিয়া টিপুকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছে। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামি গোলাম মোস্তফা ও এএইচএম কিবরিয়াকেও গতকাল রায়ে খালাস দেয়া হয়েছে।
রায়ে ২১ আসামির মধ্যে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথরেফারেন্স ও আসামীদের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। আপিল না করা পলাতক ১১ আসামির বিষয়ে কোন কিছু বলে নি আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবীরা জানায়, পলাতকদের বিচারিক আদালতের দেয়া যাবজ্জীবন সাজা রায়ই বহাল থাকল। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা পাওয়া পলাতক ১১ আসামি হচ্ছেন- ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান।
শুনানিকালে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী শাহ আলম।
গতকাল হাইকোর্ট আসামীদের বিষয়ে রায় ঘোষণা ছাড়াও হত্যার শিকার বিশ্বজিতের মরদেহের সুরতহাল ও ময়না তদন্তের সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তাদের কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, পেশাগত অসদাচরণ বিষয় প্রতীয়মান হওয়ায় এ আদেশ দেয়া হয়।
বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও দেয়া হয় অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়।
ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেন আটক আসামিরা।
বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ২১ আসামির মধ্যে ৮ জন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়দানকারী উল্লেখিত আসাীরা নির্মমভাবে খুন করে বিশ্বজিৎ দাসকে। শাখারীবাজারে বিশ্বজিতের একটি টেইলার্স ছিল। তিনি থাকতেন লক্ষ্মীবাজার। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর।
এ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মামলা করা হয়। এ হত্যার ঘটনা গনমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সে আলোকে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।-বাসস

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ