বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যার সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের নোটিস

আপডেট: জুলাই ২, ২০২৪, ৯:৪০ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:


পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী এবং দুই কন্যার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নোটিস ইস্যুর ২১ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ নোটিস দেওয়া হয়েছে। দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নোটিসে বলা হয়েছে, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে দুদকের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, আপনারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। নিজ ও আপনাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির নামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী কমিশনে দাখিল করবেন।

এ আদেশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে সম্পদ বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে কিংবা মিথ্যা সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠলে তা আমলে নিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

গত ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীসান মীর্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে। অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। দুদকের এই টিম অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাকে দুই দফায় দুদকে হাজির হতে নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, তারা অনুপস্থিত থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য জমা দেন। দুদক এ বিষয়ে এখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

সরকারি চাকরিকালে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট নিয়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। তার এই পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি টিম পাসপোর্ট অফিসের চারজন পরিচালক, একজন উপ-পরিচালক ও দুজন উপ-সহকারী পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশ পরিচয় গোপন করে বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে পাসপোর্ট নিয়েছেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল রঙের অফিসিয়াল পাসপোর্ট করেননি। সুযোগ থাকার পরও নেননি লাল পাসপোর্ট।

জানা গেছে, অবৈধ সম্পদের পাশাপাশি বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে বেনজীরের সাধারণ পাসপোর্ট তৈরির বিষয়েও অনুসন্ধান করছে দুদক। গত ২৫ জুন এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দুই অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও দুই পরিচালকসহ ১৫ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এর আগে গত ২৩ মে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।

অন্যদিকে, গত ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের ২৩টি কোম্পানির শেয়ার, ১১৯টি জমির দলিল ও গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন। গত ২৩ মে তাদের নামীয় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ সপরিবারে বিদেশে রয়েছেন।
তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি

Exit mobile version