ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক:ভাষা আন্দোলনের স্বর্ণফসল হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পিছনেও রয়েছে দীর্ঘ সাধনা ও সংগ্রামের ইতিহাস। মাতৃভাষা প্রেমিকগোষ্ঠী নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কানাডা প্রবাসী বাঙালি রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আবেদন জানান। তাদেরই প্রচেষ্টায় এবং তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (ইউনেস্কো) ১৬০তম অধিবেশনে বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশের সমর্থন নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ওই দিনই প্রতিষ্ঠিত হয়।

এ ঘোষণায় বিশ্বের প্রায় আট হাজার মাতৃভাষা সম্মানিত হলো। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কোর সদর দপ্তরসহ পৃথিবীর ১৯৪টি সদস্য দেশে নিজ নিজ মাতৃভাষার আলোকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস তাই বাঙালি জাতির ইতিহাসে গৌরবময় ও অবিস্মরণীয় দিন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক অবদান সর্বজনবিদিত। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস প্রাচীন। ভাষা বিজ্ঞানীদের মতে ভাষার জন্ম আজ থেকে পাঁচ লাখ বছর আগে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির জীবনে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ঘটনা যা বাঙালি কখনো ভুলতে পারে না। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ঘটেনি। ভাষা আন্দোলন ছিল লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পাকিস্তান আন্দোলনেরই বর্ধিতরূপ। ইতিহাসের পিছনে যেমন ইতিহাস থাকে, তেমনি বায়ান্নর পিছনেও ছিল আটচল্লিশ।

১৯৪৮-এর ১১ মার্চ সংঘটিত হয় বাংলা ভাষার দাবিতে প্রথম সফল গণবিস্ফোরণ। শুধু ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ নয়, আমরা দেখেছি ১৯৪৭ সালেও রয়েছে ভাষা আন্দোলনের এক গৌরবময় সূচনা-পর্ব। বায়ান্নর গোড়ায় যেমন ছিল আটচল্লিশ, তেমনি আটচল্লিশের গোড়ায় ছিল সাতচল্লিশ। বলতে গেলে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রচিত হয়েছিল ১৯৪৭-এর ১৪ আগস্টে ভারতবর্ষ ভাগাভাগির (পার্টিশন) মাধ্যমেই। সে হিসেবে বলা যায় ১৪ আগস্টের আগে যেমন রচিত হয় ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিত-পর্ব, তেমনি ১৯৪৭ সাল ছিল এ আন্দোলনের সূচনা-পর্ব।
(চলবে)