মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে

আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

বাংলা অভিধান থেকে বৈষম্যমূলক শব্দসমূহ বাদ হোক

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের কালজয়ী ভাষণ দিবসে একটি সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছেÑযা নারীর মর্যাদার প্রশ্নে দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সোনার দেশ পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তথ্যমতে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ এবং সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্তের পর আরও কিছু প্রক্রিয়া মেনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হচ্ছে। ৭ মার্চ সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে নারী দিবস নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি) এ বিষয়ে কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমাদের সংবিধানে মহিলা শব্দটি নেই, নারী আছে, আমরা একটা প্রস্তাব করে ফেলেছি আমাদের মন্ত্রণালয়ের নাম নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় করার জন্য।’ সংসদীয় কমিটিকে ধন্যবাদ যে তারা বিষয়টিপ বিবেচনায় নিয়েছেন। আমরা প্রত্যাশা রাখি,মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সুপারিশ অনুমোদন লাভ করবে।

দেশে নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতই। সরকারি-বেসরকারি কিংবা এমন কোনো উদ্যোগ নেই যেখানে নারীরা তাদের সক্ষমতা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। বরং নারী বিদ্বেষী অচলায়তন ভাঙ্গার ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের লাভ হয়েছে। দেশের যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি তা এই সক্ষমতা অর্জনের কারণেই সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ দেশের উন্নয়নে নারীরা এখন গুরুত্বপূর্ণ অংশিদার। ঘরের ও বাইরের দায়িত্ব সামলেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।

তার মানে এই নয় যে, পথচলাটা এখনই মসৃণ হয়ে গেছে। দেশের নারীদের এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে নারীর প্রতি অবমাননাকর ও অমর্যাদার শব্দ থেকেও নারীদের পরিত্রাণ পাওয়ার সময় এসেছে। অনেক শব্দ আছে যা আমাদের কথার মধ্যে প্রতিনিয়ত উচ্চারিত হয় তা নারীকে হেয়, কটাক্ষ ও অমর্যাদা করে। আমরা নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের কথা বলছিÑঅথচ নারীকে অবমাননাকর শব্দসমূহ বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। এটা দায়হীনতার প্রকাশ। নারীর প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে ভাষার মধ্যেকার আপত্তিজনক শব্দগুলো উন্নত দেশগুলো অনেক আগেই থেকেই বাদ দিতে পেরেছে। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

শুধু ‘মহিলা’ শব্দই যে নারীকে হীন করে ব্যাপারটা তেমন নয়। এমন আরো অনেক শব্দ আছে যা নারীকে কটাক্ষ করে কিংবা অধিনস্ত হিসেবে গন্য করে- সেগুলোও চিহ্নিত করে বাংলা অভিধান থেকে বাদ দেয়ার সময় এসেছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্ত সেই আশা জাগাচ্ছে যে, নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য সৃষ্টিকারী অমর্যাদাকার শব্দসমূহ চিহ্নিত করে সেগুলো বাংলা অভিধান থেকে বাদ দেয়া হবে।

Exit mobile version