মোহনপুরে সাইনবোর্ড আছে, নেই স্কুলের অবকাঠামো

আপডেট: মে ৬, ২০২৪, ১১:৫৬ অপরাহ্ণ

মোস্তফা কামাল, মোহনপুর:


বিদ্যালয়ের জমি আছে। আছে নামকরণের সাইনবোর্ড। নাই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো। আগে পাঠদান ছিল। আলোচিত এ বিদ্যালয়ের নাম ধামিন নওগাঁ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার অবস্থান ছিল মোহনপুরের কেশরহাট পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে ধামিন নওগাঁ গ্রামে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির ভুমিগ্রাসের বলি হিসেবে বিলীন হয়ে যায় এ বিদ্যালয়টি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরুরী ছিল। এজন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় তারা। ১৯৯৯ সালে গ্রামবাসী জমি দান করে বিদ্যালয় স্থাপন করেন। শুরু হয় শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন রাবেয়া বাসরী এবং তার স্বামী বর্তমান কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ছিলেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তাদের অনিহায় বিদ্যালয়ের পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। এবার প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজস করে ওই বিদ্যালয়ের জমি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজ মালিকানা হিসেবে দখল করে নেন। বিষয়টি জানান হলে ২০১৬ সালে বিদ্যালয়ের জমি জালিয়াতি ও দখলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন তৎকালিন ইউপি সদস্য নায়েব আলী মণ্ডল।

বিদ্যালয়ের জালিয়াতি এবং দখলের ঘটনা প্রমাণিত হওয়াই প্রধান শিক্ষক রাবেয়া বাসরী এবং সভাপতি শফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠান মহামান্য আদালত। দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর জমি ফেরত দিয়ে সস্ত্রিক জামিন লাভ করেন। এর পরও ওই জমির অংশ বিশেষ পুনরায় নিজের নামে খারিজ নেন আলোচিত প্রধান শিক্ষক শফিফুল ইসলাম। এবারেও খারিজ বাতিল করে জমি উদ্ধার করেন গ্রামবাসী।

অভিযোগ রয়েছে আলোচিত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর বিদ্যালয় নামীয় জমি জালিয়াতি অর্থ লোপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক শফিকুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান থাকার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড।বিদ্যালয়গুলোর সম্পদ রক্ষায় আলোচিত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুষ্ঠুৃ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

ধামিন নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার মামলার বাদি নায়েব আলী মন্ডল জানান, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আমার আপন ভাগিনা। তার এধরনের জালিয়াতির কবল থেকে কোনো বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের সম্পদ নিরাপদ নয়। তিনি আরো বলেন, যেহেতু ওই স্থানে স্কুল নাই, সেহেতু জমিদাতাতের নিকট ফিরিয়ে না দিলে শফিকুল ইসলাম বার বার জমিটি দখলের পাঁয়তারা করছেন। আর না হলে স্কুল স্থাপন হলে ভাল হতো।

উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের আলোচিত প্রধান শিক্ষক শফিকুলকে সাময়িক বরখাস্তের জন্য ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ধামিন নওগাঁ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফেরত রেজিস্ট্রি দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে কথা নয়। শিক্ষাবোর্ডের সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ পত্র পেয়েছি। এবিষয়ে আপিল আবেদন করবো। তবে ইউএনও অফিসের ইস্যুকৃত চিঠি হাতে পাইনি।

রোববার সকালে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার আয়শা সিদ্দিকা বলেন, প্রধান শিক্ষক সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে তিনি শিক্ষাবোর্ডে আপিল আবেদন করবেন জানিয়েছেন। তবে তাকে দাপ্তরিক কাজ না করার জন্য বলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version