নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল চারটা থেকে একটানা রাত আটটা পর্যন্ত ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে এমন স্বস্তির বৃষ্টি ফসলের জন্য উপকার বলছে কৃষি অফিস।
জানা গেছে, রোববার (৩০ জুন) থেকে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে। কখনো সকালে আবার কখনো বিকেল বা রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে। রোববার ও সোমবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হলেও সর্বশেষ মঙ্গলবার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে পশ্চিম আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘ উঠে আসে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ঝরতে থাকে বৃষ্টি। এসময় কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো মুসলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের এই বৃষ্টিপাতে অনেকে ভিজে জীবন জীবিকার তাগিদে কাজ করতে দেখা গেছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের ফলে রাজশাহী নগরীর উপশহর, উপশহর নিউমার্কেট, সপুরা করবস্থানের উত্তরের সড়ক ও সাহেব বাজারের একটি সড়কে পানি জমে যায়। তবে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমে যায়।
এছাড়া কৃষকের জমিতে ধান, পাট, আখ ছাড়াও বিভিন্ন সবজি রয়েছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এই ফসলগুলোতে পানি প্রয়োজন ছিল। এই বৃষ্টির ফলে ফসলি জমিতে পানির অভাব পূরণ হয়েছে। বৃষ্টির ফলে একদিকে ফসলে উপকার। অন্যদিকে আর্থিকভাবে লাভোবান হলেন চাষীরা।
রাত আটটার দিকে উপশহরের জানান, বৃষ্টিপাতের পরে সড়কে পানি জমে যায়। সন্ধ্যার দিকে বেশি পানি ছিল। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পানি নেমে যায়।
পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের হাজরাপুকুর এলাকার বাসিন্দা রাজু আহম্মেদ বৃষ্টির পর খেতে নেমেছেন ধানের বীজতলা তৈরির জন্য। তিনি বলেন, এই বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টি হলে ধানের বীজতলা ফেলবো। বৃষ্টির ফলে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ বাবদ চাষীরা ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ কম হবে।
নগরীর বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে শ্রমিক নিয়ে ধান লাগানোর জমি প্রস্তুত করেছি। বিকেলে কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে পাটের খেতে কাজ করা হচ্ছে। জমি থেকে অতিরিক্ত পাট গাছ তুলে ফেলা হচ্ছে। বৃষ্টির দরকার ছিল। বৃষ্টির ফলে পাটের জন্য উপকার হলো।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ রহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আকাশে মেঘ থাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, এই বৃষ্টি ফসলের জন্যই ভালো হলো। জমিতে কৃষকরা ধানের বীজ ফেলছেন। এছাড়া পাটের জন্য ভালো হলো। জমিতে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার মতো কোনো ফসল নেই। বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন শাকসবজি ভালো হবে।