রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফ্যাসিবাদ নির্মূল কমিটি (ফ্যানিক ২৪) নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহ্বায়ক হিসেবে নাট্যকলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা ও সদস্য সচিব হিসেবে আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জসিম রানা মনোনীত হয়েছেন। অনুষ্ঠানে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ মোট ১২৪ জন শিক্ষার্থীকে শপথবাক্য পাঠ করান ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনক।
এসময় সংশ্লিষ্টরা জানান, সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবকে চিরঞ্জীব রাখতে এই বিপ্লবের গণহত্যাকারী ঘাতক এবং এই বিপ্লবের বিজয় থামাতে গণহত্যা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যারা প্রকাশ্যে, মিডিয়ায় এবং নানান মাধ্যমে বিপ্লবী ব্যতিক্রম সক্রিয় প্রতিক্রিয়া চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনত শাস্তি প্রদানের ব্যাপারে চাপ প্রয়োগকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।
সংগঠনটির স্লোগান, ‘আমি বিদ্রোহী বীর, চির উন্নত মম শির।’ মোটো হলো, ‘শিক্ষায় বিপ্লব, বিপ্লবে মুক্তি।’ কর্মধারা হলো, সংগঠনটি চার দফায় এর কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকবে।
সংগঠনের চার দফা কার্যক্রম হলো, জুলাই বিপ্লবকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চিরঞ্জীব রাখার প্রয়াসে সভা, সেমিনার, চিত্রাঙ্কন, প্রদর্শনী, নাটক, লেখনী এবং বিতর্ক সভার আয়োজন করা; স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের উপর হামলাকারী অপশক্তিকে বিচারের আওতায় আনা; ২৪-এর বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যারা অপচেষ্টায় নিয়জিত এবং বিপ্লবের বিরোধিতা করে চক্রান্তের নতুন নতুন বয়ান দাঁড় করাচ্ছে, তাদের প্রতিহত করা এবং জুলাই গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার লক্ষ্যে চাপ প্রয়োগকারী শক্তি/সংস্থা হিসেবে কাজ করা।
সংগঠনটির আয়ের উৎস হবে এর উপদেষ্টা পরিষদ, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং বিপ্লব জাগিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখতে চাওয়া বিপ্লবীদের অনুদান। এছাড়াও সংগঠনটির প্রকাশনা সামগ্রী থেকে লভ্যাংশের অর্থ-ই সংগঠনটির আয়ের উৎস।
অনুষ্ঠানে ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, আমরা বাংলাদেশকে সব ধরনের ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেখতে চাই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মানবিক মর্যাদা অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের যে সমান অধিকার, তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সে জায়গা থেকে ইতিপূর্বে বাংলাদেশে যেসকল শাসকগোষ্ঠী ছিলো, তারা এদেশে একই কায়দায় এবং সংবিধানকে ব্যবহার করে কমবেশি সকল দলই ফ্যাসিবাদকে কায়েম করেছে।
যার কারণে চূড়ান্ত পর্যায়ে ২০২৪ এ এসে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এদেশের ছাত্রসমাজ যে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে এবং ভবিষ্যতে যাতে কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে না পারে সেই লক্ষে কোনো দল, ব্যক্তি বা মতাদর্শ কে লক্ষ্য করে নয়, সকল রকমের স্বৈরতান্ত্রিক এবং ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলার প্রত্যয় নিয়ে আজকে এই ফ্যাসিবাদ নির্মুল কমিটি গঠিত হতে যাচ্ছে।