রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক:একটি দেয়ালে চিত্র অংকনে ব্যস্ত কিছু শিক্ষার্থী। রং-তুলির আঁচড়ে দেয়ালটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গার ছবি ফুটিয়ে তুলছেন তারা। অথচ, কয়েকদিন আগেও দেয়ালটি ছিল বিভিন্ন ধরণের পোস্টারে ঠাসা। কয়েকদিন ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিবহন মার্কেট সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এমন চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম ব্যাচ হওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ব্যাচের নাম দিয়েছে ‘অনির্বাণ ৬৬’। গত ২১ জানুয়ারি ছিল তাদের ব্যাচ ডে। ওইদিন তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেওয়ার পাঁচবছর পূর্ণ হয়। ব্যাচের ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের অপরিচ্ছন্ন একটি দেয়ালকে ১৩ খন্ডে বিভিন্ন রঙিন চিত্রে রাঙিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। তাদের কাজ শেষ হতে এখনো দুই-তিন দিন লাগবে। এখানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে কাজ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা দেয়াল থেকে পোস্টার উঠিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে সেখানে জায়গা করে দিচ্ছেন রাবির বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনাকে। মনে হচ্ছে তারা যেনো দেয়ালটিতে ভাষা দিচ্ছেন। সেখানে শহীদ মিনার থেকে শুরু করে, সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য, প্রশাসনিক ভবন, আমবাগান, টুকিটাকি চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস, শামসুজ্জোহা চত্বর, কিউব চত্বর, বই চত্বর, বন্ধুদের আড্ডাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
৬৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও। এবিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ হোসাইন দূর্জয় বলেন, ক্যাম্পাসের প্রায় সকল দেয়ালই কোনো না কোনো রাজনৈতিক সংগঠন, বিসিএস কোচিং সেন্টার কিংবা অমুক তমুক বিজ্ঞাপনে ঠাসা থাকে। যা দৃষ্টিকটু লাগে। তাই এই ধরনের দেয়ালচিত্র ক্যাম্পাসে বেশি বেশি আকাঁ উচিত, এতে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
নিজেদের এই উদ্যোগের বিষয়ে ৬৬ ব্যাচের এবং ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের ব্যাচ ডে ছিলো ২১ জানুয়ারি। আমাদের ব্যাচ অনির্বাণ ‘৬৬’ এর ৫ বছর পূর্ন হলো। আমাদের ক্যম্পাসে র্যাগওয়াল, ব্যাচ ওয়াল এই ধরনের কাজ হয় নাহ। তবে আমরা ভার্সিটির স্থাপত্য এবং গত ৫ বছরে ক্যাম্পাসে আমাদের পথচলাকে এই দেয়ালে তুলে ধরছি। আমরা চাই, এটা যেনো ট্রেন্ডে পরিনত হয় এবং পরবর্তীতেও শিক্ষার্থীরা এই ধরনের কাজ করে।
একই ব্যাচের এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. গালিব হাসান বলেন, দেয়ালে যে চিত্রগুলো আকাঁ হচ্ছে সেগুলো আমাদের অনির্বাণ ‘৬৬’ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আবেগের সাথে সম্পর্কিত। আমরা ক্যাম্পাসের ১৩ টি অংশে এই অঙ্কন করছি। এখানে ৪০ এর অধিক শিক্ষার্থী কাজ করছে। ২-৩ দিনের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে।