সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী নগরীর উন্নয়নে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী (একনেক) সভায় ৪৪৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪০ কোটি ১৩ লাখ টাকা রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। অবশিষ্ট ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা কোর্ট থেকে রাজশাহী বাইপাস সড়ক পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের জন্য ব্যয় করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বেগ জানান, ১৩টি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সরকার এ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। এর বেশির ভাগ অর্থ ব্যয় হবে শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাগার নির্মাণে। এছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ, শিক্ষকদের জন্য কোয়ার্টার ও ডরমিটরি নির্মাণ ও একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, কোর্ট থেকে বাইপাস পর্যন্ত সড়ক অনেক সরু। তাই প্রায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এইজন্য সড়ক প্রশস্তকরণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। নগরবাসীর যানজট নিরসন ও নগরবাসীকে বাইপাসের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সড়কটি প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ জানান, দুই দশমিক ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চার লেন বিশিষ্ট সড়কটি ৬৪ ফুট চওড়া হবে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সড়কের নির্ধারিত সীমানায় থাকা পুরাতন ভবন অপসারণের কাজ চলছে। যেহেতু প্রজেক্ট অনুমোদন হলো, এখন দরপত্র আহ্বান করে মূল কাজ শুরু করা হবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ওই সভায় মোট ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এই ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে যোগান দেয়া হবে ৯৫৪ কোটি ৮ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ১০০টি একনেক বৈঠক হয়েছে। এতে ৭৩৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৫ হাজার সিসি টিভি বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেখানে মোবাইল টিম থাকবে। ফলে অপরাধ ও যানজট অনেক কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আলীকদম-জালানীপাড়া-করুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭৪ কোটি ১ লাখ টাকা।
গোপালগঞ্জ এবং বাগেরহাট পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতিকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কোর্ট থেকে রাজশাহী বাইপাস সড়ক পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
বৃহত্তর নোয়াখালী পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন-২ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
এছাড়া রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ঢাকা কারিগরি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ কোটি টাকা। সাভার সেনানিবাসে মিলিটারি পুলিশ সেন্টার ও স্কুল নির্মাণ প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ১৬৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এলইডি সড়কবাতি, সিসিটিভি, ক্যামেরাও সিসিটিভি কন্ট্রোল সেন্টার সরবরাহ ও স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪২ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বৈঠকে মন্ত্রীবর্গ, প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সচিবগণ ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।- বাসস