অনাগত শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

গর্ভবতী মায়ের জন্য স্বস্তির

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাটা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এটা যখন নতুন জ্ঞান হিসেবে দেশের মানুষের কাছে উপস্থাপিত হয় তাতে মানুষের মধ্যে বেশ কৌতুহলের উদ্রেক করে। কিন্তু ব্যবস্থাটি ক্রমশ পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে শুরু করে। যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে গন্য হয়। লিঙ্গ বৈষম্য সহিংসতার মাত্রা লাভ করে। এর ফলে নারীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ভয়াবহতা সামনে নিয়ে আসে। লিঙ্গ-বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থাটি বেশ পরিপন্থি।

বাংলাদেশের উচ্চ আদালত একটি ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা দিয়েছেন তাতে ওই ব্যবস্থাটা রোহিত করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে অনেক আগেই ব্যবস্থাটি রোহিত করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ে উল্লেখ করেছেন কোনো হাসপাতাল, ডায়াগনিস্টক সেন্টার, ল্যাবরেটরি ও কোনো মাধ্যমে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না। অর্থাৎ গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা আজকের পর থেকে জানার কোনো সুযোগ নেই। এ রিট চলমান থাকবে। অমান্য করলে পরে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। একই সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান’র হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে।

রুলে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদিদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদিদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চান হাইকোর্ট।

স্বাস্থ্যসচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ৭ বিবাদিকে ৬ সপ্তাহের মধ্য রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এটা খুবই স্বস্তি ও আনন্দের বিষয় যে, গর্ভের সন্তানের পরিচয় প্রকাশ না করার বিষয়টি একেবারে কোনো প্রকার আপত্তি ছাড়াই মেনে নিয়েছে সরকার। এটি জানার অধিকার কারো নেই। কারণ এতে মা মানসিক চাপের শিকার হতে পারেন। এতে মা ও অনাগত সন্তান উভয়েরই ক্ষতি হতে পারে। এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে যেমন গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে জানতে পারে না, তেমনি এ বিষয়টি জানানো বন্ধ হয়ে যাবে যে মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে। যার ফলে আমরা একটা সুস্থ সন্তান পাব। অনেক সময় দেখি গর্ভের সন্তান কন্যা থাকলে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হন মায়েরা, সেগুলো থেকে মা ও শিশু রক্ষা পাবে। এ ছাড়া কন্যা সন্তান হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যাবরশনের ঝুঁকি থাকে, সেগুলো থেকে মায়েরা নিস্তার পাবেন।

Exit mobile version