সাঁথিয়ায় আগুনে পুড়লো কৃষকের বসতঘর ও গরু-ছাগল

আপডেট: মে ২, ২০২৪, ১:৩৪ অপরাহ্ণ


জালাল উদ্দিন,সাঁথিয়া(পাবনা):


পাবনার সাঁথিয়ার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কৃষকের ৮টি ঘর পুড়ে ভষ্মিভুত হয়েছে। এ সময় একটি গরু ও দুটি ছাগল পুড়ে মারা যায়। আগুনে পেঁয়াজ, ধান, গম, আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ ও নগদ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাড়ির মালিকদের দাবী।

বুধবার (১মে) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামে মৃত এসকেন মোল্লার ছেলে মোয়াজ্জেল হোসেন, মোতালেব হোসেন, আজিজুল হক ও আনছার আলীর ছেলে আব্দুল হাদির বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টাব্যপি চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষণে পুড়ে সব শেষ হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর ধারণা।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১মে) বিকেলে ওই গ্রামের মোয়াজ্জেল হোসেনের গোয়ালঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তাঁর গোয়ালঘরে গরুর গোসল করানোর মোটর (পানির পাম্প) ও ফ্যান ছিল। গোয়ালঘরে হঠাৎ আগুন দেখে বাড়ির লোকজন স্থানীয়দের ডাকাডাকি করেন এবং সাঁথিয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখা মোয়াজ্জেল হোসেন ও তার ভাই মোতালেব হোসেন ও আজিজুল হকের বসতঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘরে এবং প্রতিবেশি আনছার আলীর ছেলে আব্দুল হাদির বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকাবাসী ও সাঁথিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে আগুনে পুড়ে মোয়াজ্জেল হোসেন, মোতালেব হোসেন, আজিজুল হক, আব্দুল হাদির বসতঘর ও গোয়ালঘরসহ ৮টি ঘর পুড়ে যায়। এসময় মোয়াজ্জেল হোসেনের জমি বিক্রির নগদ প্রায় ৩ লাখ টাকা এবং মোতালেব হোসেনের একটি গরু ও দুইটি ছাগল পুড়ে মারা যায়। আগুনে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

এছাড়া পৃথক অগ্নিকাণ্ডে ওইদিন সকাল ৮টার দিকে একই গ্রামের মৃত আজগার আলী মোল্লার ছেলে আবু তালেবের বাড়িতে ছাইয়ের স্তুপ থেকে আগুনে রান্না ও খাবার ঘর পুড়ে যায় বলে এলাকাবাসী জানান।

ক্ষতিগ্রস্ত মোয়াজ্জেল হোসেন বলেন, আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য জমি বিক্রি করে প্রায় ৩ লাখ টাকা ঘরে রেখেছিলাম। কিন্ত আগুনে পুড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেল! পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই রইলো না।

কৃষক মোতালেব হোসেন জানান, অনেক কষ্ট করে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলাম সব পুড়ে গেল। আগুনে পুড়ে আমার সব শেষ হয়ে পথে বসে গেলাম। বসবাসের ঘরটাও রইলোনা। কিভাবে সংসার চালাবো আর সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেব সে চিন্তায় এখন দিশেহারা।

সাঁথিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার অর্ঘ্য দেবনাথ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত করে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version