শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ২৯ শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
তেল নিয়ে তেলেসমাতির ঘটনায় জড়িতরা যে শুধু অতি মুনাফার জন্য বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করছে তাই নয়- এর অন্য উদ্দেশ্য আছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। কোম্পানি ও ডিলার পর্যায়ে যোগসাজস করেই বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করা হচ্ছে। সুযোগ খুচরা ব্যবসায়ীরাও নিচ্ছে। এর মধ্যে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নাই এমনটাও জোর দিয়ে বলা যায় না। যখন কিনা সরকার-ব্যবসায়ী সমঝোতা করেই সয়াবিনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে- সে ক্ষেত্রে বাজারে তেলের সরবরাহ ঘাটতির কোনো কারণ থাকতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে দাম বাড়ানোর পরও ডিলারদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা। ডিলাররা বলছেন, তারা কোম্পানি থেকে সাপ্লাই পাচ্ছেন না। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনির অভিযানে দেখা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সয়াবিন তেল মজুত করছেন ডিলার, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাদের আইনের আওতায়ও নেয়া হচ্ছে।
সরকার ব্যবসায়ীদের এই কারচুপি আচরণকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেই উল্লেখ করেছে। সরকারের সাথে সমঝোতা হওয়ার পরও সয়াবিন নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির বিরুদ্ধে সরকার পুরোপুরি হার্ড লাইনে আছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি বেভেন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার লিটার সয়াবিন অবৈধ মজুদ থেকে জব্দ করেছেন।
মঙ্গলবার (১০ মে) রাজশাহীর পুঠিয়া, গোদাগাড়ী ও পাবনার ঈশ্বরদীতে অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৬৪ লিটার ভোজ্য তেল জব্দ করা হয়। শুধু পুঠিয়ায় ৪টি গোডাউন থেকে ৯২ হাজার ৬১৬ লিটার সয়াবিন জব্দ করা হয়। এ সময় ৫ জনকে আটক করা হয়। সয়াবিন তেলের এই মজুদদারি মোটেও স্বাভাবিক নয়- এর মধ্যে বাজার ব্যবস্থায় এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা এটি। যদিও সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এখন প্রশ্ন, তেল নিয়ে খেলছে কারা? এই খেলায় রাজনীতির গন্ধ আছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার সময় হয়েছে। সরকারও বোধ করি বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছে যে, ভোজ্য কেল নিয়ে একটা রাজনৈতিক খেলা আছে। এবং নেপথ্যের খেলোয়াড়রা সময় সহায় নয় জেনেও খেলার সূচনা করে চলেছে। সরকার অনেক ক্ষেত্রে নোংরা খেলা ব্যর্থ করে দিয়েছে। সয়াবিন নিয়ে এ খেলাও হয়ত ব্যর্থ হবে কিন্তু নেপথ্যে থেকে যারা খেলছে তাদের কোনোভাবেই ছেড়ে দেয়া সমীচীন হবে না। এদের শনাক্ত করতে হবে। শাস্তি দিয়ে হবে। দেশের মানুষের কাছে কালো তালিকা করে প্রকাশ করতে হবে। এরা শুধুই ঘৃণার যোগ্য। মজুদদার- খেলোয়াড়দের সামাজিকভাবেই ঘৃণিত ব্যক্তি হিসেবে দেখতে হবে।