সোনার দেশ ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ মুহূর্তে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজগঞ্জের দুটি স্টেশন দুই মাস পরেও চালু করা যায়নি; পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র ট্রেনটিও।
স্থানীয়রা সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এবং সদর উপজেলার সদানন্দপুরে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন দুটি স্টেশন চালুর জন্য কর্মসূচি পালন করে আল্টিমেটাম দিলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।
আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অন্যান্য ট্রেন ও স্টেশন এরই মধ্যে সচল হলেও সিরাজগঞ্জের এ দুইটি স্টেশন চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না।
যদিও ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী সব ট্রেনই শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে।
সরকার পতনের আগের দিন ৪ অগাস্ট বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা স্টেশন দুটি হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করে। পরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে স্টেশন দুটির অফিস কক্ষে থাকা কম্পিউটার, টেবিল-চেয়ার, ফ্যান ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
স্টেশন দুটি বন্ধ থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। তাদেরকে বাধ্য হয়ে আশপাশের স্টেশনে নেমে শহরে বা সদানন্দপুরে আসতে হয়। এই ভোগান্তি এড়াতে অনেকই ট্রেনে চলাচল করতে অনীহাও প্রকাশ করছেন। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
স্টেশন দুটি দ্রুত সংস্কার করে সচল করা এবং ‘সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস’ চালুর দাবিতে মঙ্গলবার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু সংবাদ সন্মেলন করে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ‘আমরা সিরাজগঞ্জবাসী’র ব্যানারে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সমন্বয়ে কয়েক দফা সিরাজগঞ্জ শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা এিনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ।
কিন্তু দুই মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আহসানুর রহমান বলেন, “ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে স্টেশন দুটি সম্পন্ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। অনেক কিছু লুটপাট করা হয়েছে।
“স্টেশন দুটির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। সংস্কারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।”
এমনকি হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলাও হয়নি বলে জানান আহসানুর রহমান।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার (পাকশী) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, “হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর থেকে ওই স্টেশন দুটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। যে কারণে ‘সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
“বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সংস্কারের বিষয়ে এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ