রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অফিস
প্রায় ১২ ঘণ্টা কোন চিকিৎসক ছাড়ায় চললো চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম। গতকাল শনিবার রাত ৮টা থেকে পরদিন রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত কোন চিকিৎসকই ছিলো না জরুরি বিভাগে। এসময় আগত রোগিদের সামাল দিয়েছেন হাসপাতালের ব্রাদাররা। জেলার ১৬ লাখ অধিবাসীর জন্য প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রের এই বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুধিজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালনের কথা ছিলো ডা. আহমেদ শাহরিয়ার হাসানের। কিন্তু তিনি ওই সময়ে হাসপাতালে ছিলেন না। ফলে পুরো ১২ ঘণ্টা হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চলে কোন চিকিৎসক ছাড়ায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে যোগ দেন ডা. আহমেদ শাহরিয়ার হাসান। পরদিনই তিনি বগুড়ায় একটি ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে ২ মাসের ছুটি নিয়ে হাসপাতাল ছাড়েন। অথচ ছুটিতে থাকা ওই চিকিৎসকেরই শনিবার রাতে হাপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালনের কথা ছিলো।
হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, শনিবার রাতে জরুরি বিভাগে কোন চিকিৎসক না থাকায় সবকিছু একাই সামলিয়েছেন মেডিকেল অ্যাসিটেন্ট রফিকুল ইসলাম। ওই রাতে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা থেকে একজন জটিল রোগি আসায় খুব সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে কোন কিছু বলতে চান নি রফিকুল ইসলাম।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আয়েশা জুলেখার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শনিবার রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, চিকিৎসক সঙ্কটের কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ছুটিতে থাকা এক চিকিসককে কিভাবে শনিবার রাতের ডিউটি দেয়া হলো-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডা. শাহরিয়ার হাসান ছুটিতে যাওয়ার আগেই এই দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। কিন্তু চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে তার স্থলে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেয়া যায় নি। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও হাসপাতালে নতুন চিকিৎসক দেয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন ডা. কাজী শামীম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয় নি। তবে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ১২ ঘণ্টা চিকিৎসক না থাকার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
এদিকে জেলাবাসীর প্রধান এই চিকিৎসা কেন্দ্রের বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুধিজনরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শনিবার রাতে চিকিৎসকের অভাবে কোন রোগির মৃত্যু হলে তার দায় কে নিত? স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারী না থাকার কারণে এই হাসপাতালে নিয়ম-শৃঙ্খলার কোন বালায় নেই বলে জানান তিনি।