১৫৬ চাকরির জন্য ১৯ হাজার বেকারকে আসামে গিয়ে অনলাইন পরীক্ষা দিতে নির্দেশ!

আপডেট: মে ১, ২০২৪, ১:২২ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক:


ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৫৬ টি পদে চাকরি পাওয়ার আশায় আসামে গিয়ে অনলাইন পরীক্ষা দিতে হবে ত্রিপুরার প্রায় ১৯ হাজার বেকারকে! ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এই অদ্ভুত সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র-অসন্তোষ চলছে ত্রিপুরা জুড়ে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে, ত্রিপুরার পরীক্ষা ত্রিপুরাতেই নিতে হবে।

প্রদেশ যুব কংগ্রেস সোমবার (২৯ এপ্রিল) পোস্ট অফিস চৌমুহনিতে ব্যাংকের সদর দপ্তরের সামনে এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়। ডিওয়াইএফআই এবং ট্রাইবাল যুব ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ব্যাংকের এম ডি-র কাছে ডেপুটেশন দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সংস্থা হলে অন্য কথা ছিল। কোনো রাজ্যের চাকরির পরীক্ষা অন্য রাজ্যে নেয়ার নজির কারো জানা নেই। অভিযোগ উঠেছে, অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেয়ার গুপ্ত কারসাজি আছে এর পেছনে। তা ছাড়া, একবার সবাইকে প্রচুর টাকা দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হয়েছে।

এখন আসামের বিভিন্ন শহরে যাওয়া-আসা ও থাকা-খাওয়া বাবদ আরো ১০-২০ হাজার টাকা খরচ করার সাধ্য অনেকেরই নেই। তাছাড়া, এতে বাড়বে ত্রিপুরাতে স্থায়ী বসবাসের বা পিআরটিসি-র জাল নথি পেশ করে অন্য রাজ্যের বেকারদের চাকরি পাইয়ে দেয়ার সুযোগও। দু-বছর আগে জেআরবিটি পরীক্ষার মাধ্যমে কৃষি দপ্তর-সহ বিভিন্ন দপ্তরে এই রকম নিয়োগের ঘটনা ঘটেছিল।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ অক্টোবর ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংক মাত্র ১৫৬টি পদে (মাল্টি টাস্ক কর্মী, করণিক এবং সহকারী ম্যানেজার) নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করে। ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর যোগ্য আবেদন পাওয়া গেছে ১৯,৬৬৪টি। ফর্ম পিছু ১১২০ টাকা পর্যন্ত চাকরিপ্রার্থীদের দিতে হয়েছে। যুব কংগ্রেস সভাপতি নীলকমল সাহা-র অভিযোগ, কেবল ফর্ম বিক্রি করেই বেকারদের পকেট থেকে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার বেশি আদায় করেছে ব্যাংক। এখন সবার জন্য রাজ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা না করা হলে প্রয়োজনে ব্যাংকে তালা লাগানো হবে।

ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভজন চন্দ্র রায়ের বক্তব্য, আগরতলায় প্রতি শিফটে ৫৬০ জনের বেশি পরীক্ষার্থীর অনলাইন পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। তাই দিব্যাঙ্গ আর একাংশ নারীকে এখানে রাখা হচ্ছে। বাকিদের অসমের গুয়াহাটি, জোড়হাট, ডিব্রুগড়, তেজপুর এবং শিলচরে গিয়ে ৫ মে পরীক্ষা দিতে হবে। আইবিপিএস সে রকমই ব্যবস্থা করেছে। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব বলেন, রাজ্যের সব মহকুমাতে পরীক্ষা ছড়িয়ে দিলে এখানেই পরীক্ষা নেয়া সম্ভব। এমনিতেই রাজ্যে চাকরি বাকরি নেই।

গরিব ছেলেমেয়েরা অনেকে অসমে যেতেই পারবেন না। তার উপর একে ট্রেনের টিকিট নিয়ে হুড়োহুড়ি চলছে, অন্যদিকে আসামের পাহাড়ে রেল লাইন মেরামতি চলায় রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ। বিমানের টিকিটের দাম আকাশছোঁয়া। গরিব ঘরের শিক্ষিত বেকাররা চাকরির পরীক্ষায় বসবেন না, রাজ্য বিজেপি সরকার কি এটাই চাইছে ?

আগরতলায় কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তরফে এই ধরনের অনলাইন পরীক্ষা যে সব বেসরকারি সংস্থা নিয়ে থাকে তাদের একটির কর্ণধার বললেন, সরকার চাইলে সব জেলা ও মহকুমা সদরে প্রতিদিন তিন শিফটে পরীক্ষার ব্যবস্থা সম্ভব। প্রয়োজনে ১০ দিন পরীক্ষা চলবে। ক্ষতি কী ? রাজ্যের অর্থনীতির জন্যেও এটা ভাল। এই রকম হলে কাউকেই রাজ্যের বাইরে যেতে হবে না।
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন

Exit mobile version