সাতচল্লিশের ট্রেন

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩, ১১:২২ অপরাহ্ণ

সাজিদ রহমান:


মাহতাব হোসেনের ‘সাতচল্লিশের ট্রেন’ এ চেপেছিলাম। ভ্রমণ শেষ করলাম। ইতিহাসের সেই ট্রেন ছেড়েছিলো বিহারের কাটনার থেকে, এসে থামে সৈয়দপুর। সেই জার্নির প্রধান যাত্রী হুসনার সাথে ঘটনাক্রমে সাক্ষাত হয় তুহিনের। ছিলো আইরিন। এই ৩ জনের সাথে একেক স্টেশনে ওঠে রোমান, মিতু, ইকবাল কিংবা বিন্দিয়ারা। দৈবক্রমে গুলশান নিবাসী তুহিনের সুদূর সৈয়দপুরে গিয়ে সাক্ষাৎ হয় বয়স্কা হুসনা বেগমের। সেই সাক্ষাত তুহিনের কাছে ছিলো বিশেষ কিছু। এরপর ঘটনার পরম্পরায় আসে ঢাকা, সৈয়দপুর এবং পার্বতীপুরের মানুষ ও দৈনন্দিনের বিভিন্ন চিত্র। বরাবরের মত মাহতাব হোসেনের লেখনিতে আছে দারুন ছন্দ ও গতিশীল গল্প। লেখক ঢাকার উচ্চবিত্তশীল তুহিনের গল্পের সাথে জুড়ে দিয়েছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হুসনা বেগমকে। তুহিনের সমসাময়িক গল্পে চলে এসেছে ঐতিহাসিক ও বেদনার জীবন গাথা। লেখক হুসনার মাধ্যমে তুলে এনেছেন ভারত ভাগের মাধ্যমে নিজের জন্মভূমি ছেড়ে আসা একটা জনগোষ্ঠীর গল্প। তবে কাহিনীর শেষটা ছিলো বেশ সিনেমাটিক। এতিম খানা থেকে অপহরণকৃত ২টি বাচ্ছার সিনেমাটিক উদ্ধারের বিষয়টা এই উপন্যাসের আবহের সাথে যায় কিনা, প্রশ্ন রেখে গেলাম। লেখক অনেক কৌশলী হয়ে গল্পের প্লটে এনেছেন পার্বতীপুর ও সৈয়দপুর। লেখকের মত আমার নিজের বেড়ে ওঠার জায়গাও সেসব এলাকা। তাই সেটা জানার পর থেকেই সাতচল্লিশের ট্রেন পড়ার বেশ ইচ্ছে ছিলো। পড়ার অনুভূতি আনন্দদায়ক। সাতচল্লিশের ট্রেন ও মাহতাব হোসেন কেউ আমাদের হতাশ করেনি। আমার পড়া তনিমার সুইসাইড নোট ও দিলরুবাকে ছাপিয়ে গেছে সাতচল্লিশের ট্রেন। দারুন একটি উপন্যাস উপহার দেয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
লেখক: নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক বিভাগ, নওগাঁ।