রাজশাহীতে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প’র গুরুত্ব শীর্ষক সেমিনার II জাতি গঠনে ইমামদের অবদান অনেক : মেয়র লিটন

আপডেট: মে ২৩, ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীতে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের গুরুত্ব শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর ২টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানর ১৯৭৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁরই প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি আজ ইমামদের নানামূখী পুস্তিকা প্রকাশনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা ও ৩রা নভেম্বর জাতীয় চারনেতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে দেশটাকে পিছিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে দীর্ঘ চড়াই উৎরায় পেরিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অসম্পন্ন কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

রাসিক মেয়র লিটন আরো বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় চার লাখ মসজিদে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক শিক্ষা প্রদানের এই প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঝরে পড়া শিশু, বয়স্কদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। ইমামগণ জুমা নামাজে সামাজিক নানা প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদান করে থাকেন। কোভিড পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের পাশাপাশি ইমামগণ নানা ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছেন। ইভটিজিং, মাদক নিয়ন্ত্রণ, বাল্যবিবাহ রোধ, নানামূখী আয়বর্ধকমূলক কাজ করে থাকেন যার সুফল ভোগ করছে। আপনাদের নানামূখী উদ্যোগে বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

যুব সমাজ বসে না থেকে গবাদি পশু পালন, মৎস চাষ, কৃষি ভিত্তিক আয় বৃদ্ধিমুলক বিভিন্ন কর্মমূখী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেদের তথা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। যুব সমাজকে উৎসাহিত করতে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভূক্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর করার উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। জাতি গঠনে ইমামদের অবদান অনেক।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীর পরিচালক মোঃ আনিসুজ্জামান সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. বারকুল্লাহ বিন দুরুল হুদা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীর সহকারী পরিচালক একেএম মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক প্রশাসন কৃষিবিদ মোঃ মুরশিদুল ইসলাম।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, ওলামা কল্যান পরিষদের সভাপতি ও সাহেব বাজার জামে মসজিদেও পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল গণি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীর ফিল্ড সুপারভাইজার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সহ আট জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালকবৃন্দ, ফিল্ড অফিসার, ফিল্ড সুপারভাইজার ও মাস্টার ট্রেইনার।

এর আগে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে দিনব্যাপী সেমিনার উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয়-কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। এসময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনরে বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহীর-পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান সিকদার’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডি.আই.জি (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা-প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মহিনুল হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার (শাহমখদুম) মো. নূর আলম সিদ্দিকী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এএনএম মাসউদুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত ও শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে মসজিদ-ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করেন সরকার। প্রকল্পটির আওতায় অধিকাংশই সমাজের অবহেলিত, দরিদ্র এবং নিরক্ষর জনগোষ্ঠি শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। এ প্রকল্পের আওতায় মসজিদের ইমামেরা শিক্ষাকেন্দ্রে শিশু শিক্ষার্থীদেরকে বাংলা, অংক, ইংরেজী, আরবী ও নৈতিকতা এবং মূল্যবোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে আসছেন। এর ফলে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের সুবিধা-বঞ্চিত শিশুরা এ প্রকল্প’র মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থীদের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সারাদেশে মসজিদ অবকাঠামো ব্যবহার করে মসজিদ নিকটবর্তী শিশুদের জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে প্রাক-প্রাথমিক ও কুরআন শিক্ষা দেয়া হবে। এর পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীর ভর্তির হার বৃদ্ধি ও শিক্ষাথীদের ঝরে যাওয়া রোধ করা হবে।

Exit mobile version