গণহত্যার পরিমাণ ও ব্যাপকতা সম্পর্কে তদন্তে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত

আপডেট: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


৩১ ডিসেম্বর ১৯৭১ : এদিন কলকাতায় এক সরকারি মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশে মোতায়েনকৃত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সমস্ত ব্যাটেলিয়নকে আগামী দু-একদিনের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে নেয়া হবে। তিনি বলেন, ১৪ দিনব্যাপী পাক-ভারত যুদ্ধে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর প্রায় একশত সদস্য নিহত এবং ৫ শো আহত হয়।

এদিকে নয়াদিল্লির এক খবরে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল শ্যাম মানেকশ বলেন, ভারতীয় বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব ৯৩ হাজার পাক নিয়মিত ও অনিয়মিত সৈন্য ও বেসামরিক লোককে বাংলাদেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, বর্তমানে পাকবাহিনী গত যুদ্ধের বিপর্যয় সামলিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এ প্রেক্ষিতে তিনি যুদ্ধবিরতি সীমারেখা বরাবর সদা সতর্ক নজর রাখার জন্য সৈন্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

এপিবি পরিবেশিত খবরে বলা যায়, বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানি সেনাবিাহিনী ও তাদের দোসদেরও কৃত গণহত্যার পরিমাণ ও ব্যাপকতা সম্পর্কে তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য ১ টি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

কমিশন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসরগণ যে ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে সে সম্পর্কে তদন্ত এবং বিশেষভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও একটি সামগ্রিক রিপোর্ট দাখিল করবেন।

কমিশনের নেতৃত্ব করবেন হাইকোর্টের একজন জজ্ কিংবা অবসরপ্রাপ্ত জজ্ অথবা জজ্ হওয়ার যোগ্য কোনো গণ্য মান্য ব্যক্তি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লিতে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বলেন, ভারত পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ চায় না, চায় শান্তিতে বসবাস করতে। তিনি ভারতের প্রতি বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারত-মার্কিন সম্পর্কের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শ্রীমতি গান্ধী বলেন, পাক-ভারত সংঘর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই সাম্প্রতিককালে ভারতের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দু’দেশের মধ্যে পুনরায় বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে বর্তমানে বাংলাদেশ একটি বাস্তব সত্য। আর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারত চিনের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যার জন্য দায়ী পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচারের উদ্দেশ্যে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে কি-না, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারই স্থির করবেন।

Exit mobile version