নাটোরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

আপডেট: জুলাই ১, ২০২৪, ১০:১৬ অপরাহ্ণ

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:


‘চুক্তি হতে মুক্তি চাই, নিয়মিত চাকরি চাই’- প্রতিপাদ্য এবং পদবি ও মুজুরি সমতার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে। নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত মিটার রিডার কাম-ম্যাসেঞ্জার, লাইনম্যান, বিলিং সহকারীসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ওই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন।

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় সমিতির সদর দপ্তরে, সদর দপ্তর, জোনাল অফিস, সাব জোনাল অফিস ও অভিযোগ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সকাল ১০ টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন। কর্মসূচি চলাকালে ডিজিএম গুরুদাসপুর মোমিনুর রহমান বিশ্বাস, ডিজিএম লালপুর রেজাউল করিম, ডিজিএম বাঘা সুবির কুমার, এজিএম অর্থ সোহাইল আকরাম, এজিএম আইটি রাকিবুল ইসলামসহ অধিকাংশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। আন্দোলনকারীদের হাতে বিভিন্ন দাবি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার দেখা যায়।

এ পল্লী বিদ্যুৎ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, অত্র অফিসের আওতায় চারটি জোনাল, দুইটি সাব-জোনাল ও নয়টি অভিযোগ কেন্দ্রে মোট ৫৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত। এর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে ২৭৬ জন নিয়মিত। আর অবশিষ্ট ৩১০ জন কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত।
কর্মবিতরতি স্থলে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেকসই বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ও মানসম্মত এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শতভাগ বিদ্যুতায়নসহ পল্লী বিদ্যুত্যায়ন কার্যক্রমে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হলেও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবোর্ড বা বিআরইবি) কর্তৃক নিম্ন মানের বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয়ের মাধ্যমে ভঙ্গুর বিতরণ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো নির্মাণ, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগত জটিলতা এবং পলিসি প্রণয়নে অদক্ষতার কারণে সাধারণ গ্রাহক এর সুফল পাচ্ছে না।

তাই বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসমূহকে একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণের দাবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন, শোষণ ও মানহীন বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয় বন্ধের দাবিতে দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা/কর্মচারী ৫ মে ২০২৪ জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে কর্মবিরতিতে নামতে বাধ্য হয়।

বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে ১০ মে ২০২৪ বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আলোচনায় বসেন। পরে সচিব কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগদানের অনুরোধ জানিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে সামগ্রিক বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক সমাধান করা হবে মর্মে জানানো হয়। পরে কর্মবিরতি স্থগিত করে সমিতির ৩৭,৫৪২ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীর স্বাক্ষরিত পত্র বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিআরইবিতে জমা দেয়া হয়।

কিন্তু গত ২ মাসেও কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয় নাই। তাই সারাদেশে ১২ কোটি মানুষের বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত পবিসের ৪০ হাজার কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এরফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও জরুরি গ্রাহক সেবা সচল রেখে পুনরায় কর্মবিরতি শুরু হলো।

এদিকে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ যার অবস্থান নাটোর সদরে। তাদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় কর্মক্রম শেষ না হওয়ায় সকালে প্রতিকী কর্মসুচি হিসেবে ১০ মিনিট ঐক্যবদ্ধ ভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) থেকে তারাও সর্বাত্মক ভাবে কর্মবিরতি পালন করবেন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেছের।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version