ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক:(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট : বাঙালির ভাষা আন্দোলনের পেছনে এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। নিখিল পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পন্থায় পূর্ব বাংলায় উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২ সেপ্টেন্বর ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক ও ছাত্রের উদ্যোগে ‘তমুদ্দুন মজলিস’ গঠনের মাধ্যমে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় এবং সে আন্দোলনে চূড়ান্ত সফলতা আসে বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ভাষা-সংস্কৃতি হারানোর উপক্রম হয়।

পাকিস্তানি শাসকরা বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি চরম অবজ্ঞা পোষণ করে সেদিন বাঙালি জাতিকে নতুন করে যে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে, তার পরিণাম ছিল ভয়াবহ। পাকিস্তানি নব্য উপনিবেশবাদী শাসকগোষ্ঠী শুরু থেকেই এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার অব্যাহত রাখে। তাদের প্রথম ফন্দি ছিল কীভাবে বাংলার মানুষের মুখের ভাষাকে ছিনিয়ে নেয়া যায়। এরই অংশ হিসেবে তারা বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বাঙালির ঘাড়ে পাকিস্তানি Culture চাপিয়ে দেয়ার নীলনকশা অঙ্কন করে।

তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে এক সমাবেশে ঘোষণা দেন; ‘Urdu & Urdu shall be the state language of Pakistan’. কিন্তু এদেশের ছাত্র-যুবকরা সে সমাবেশেই No, No, It can’t be ধ্বনি তুলে তার এ ধৃষ্টতাপূর্ণ ঘোষণার বলিষ্ঠ প্রতিবাদ জানায়। পাকিস্তানি সরকার সব প্রতিবাদকে পাশবিক শক্তি দ্বারা দমনের চেষ্টা চালায়। তাদের বৈষম্যমূলক নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয় এদেশের মানুষ। বাংলার দামাল ছেলেরা শুধু নয়, সর্বস্তরের মানুষ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য বজ্র কঠিন শপথ গ্রহণ করে। বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন। এ আন্দোলনের পুরোভাগে এসে দাঁড়ায় ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের বাঙালি জনগণ। পূর্ব বাংলায় তিনটি পর্যায়ে আন্দোলন পরিচালিত হয়।
(চলবে)

Exit mobile version