ঈশ্বরদীতে রাসেলস্ ভাইপার আতঙ্কে মাঠের কৃষকের পায়ে উঠেছে গামবুট

আপডেট: জুন ২১, ২০২৪, ৬:০৭ অপরাহ্ণ


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি :


পাবনার ঈশ্বরদীতে বিশেষ করে পদ্মা নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল এলাকায় রাসেলস্ ভাইপার সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাঠে মাঠে কৃষকের পায়ে উঠেছে গামবুট। গত ২ মাসে কয়েকজন কৃষক রাসেলস্ ভাইপার সাপের কামড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ও গামবুটের ব্যবহারের পাশাপাশি ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সেও প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম সংরক্ষণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) সর্বশেষ খবর নিয়ে জানা গেছে, ৩-৪ বছর ধরে প্রতিবছরই ঈশ্বরদীতে রাসেলস্ ভাইপার সাপের কামড়ে একাধিক মানুষ মারা গেছেন। সর্বশেষ গত ৩১ মে পদ্মা তীরবর্তী দাদাপুরে চরের কলাবাগানে রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে দীঘা গ্রামের হাফিজুর রহমান (৪৫) নামে এক কলাচাষির মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সাহাবুল নামে আরো এক কৃষকসহ গত ৬ মাসে ঈশ্বরদীতে রাসেলস্ ভাইপারের কামড়ে পাকশী, দাদাপুর, সাঁড়া, মাজদিয়া, আরামবাড়িয়া এলাকায় ৫ জন কৃষকসহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। পদ্মার চর এলাকার কৃষক ও কলাচাষিরা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছে।

চরের ফসলি জমিতে এখন কৃষকরা গামবুট পায়ে দিয়ে চলাফেরা ও চাষাবাদ করছে। আগের চেয়ে ঈশ্বরদীতে রাসেলস্ ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। ইতোপূর্বে শহরতলির রাস্তা ও রেললাইনের ধারের কয়েক বাড়িতে এই সাপ দেখে স্থানীয়রা কয়েকটি রাসেলস্ সাপকে পিটিয়েও মেরেছেন।

রাসেলস্ ভাইপার সাপের কামড়ে আহত চরকুড়লিয়া গ্রামের কলাচাষি আব্দুর রহমান বলেন, চরের কলাবাগানে রাসেলস্ ভাইপার সাপের উপদ্রব ব্যাপকহারে বেড়েছে। কলাবাগানে গামবুট পায়ে দিয়ে কাজ করলেও মনের মধ্যে সবসময় এই সাপের আতঙ্ক কাজ করে। এই সাপ কামড়ে দিলে প্রতিষেধক সহজে পাওয়া যায় না।

কামালপুর চরের কলাচাষি কামাল হোসেন বলেন, মনে ভয় নিয়ে কলাবাগানে কাজ করি। বাগানে পড়ে থাকা পাতার নিচে লুকিয়ে থাকা সাপ আচমকা বের হয়ে ছোবল দেয়। গত ১ সপ্তাহে এই মাঠে ৬টি সাপ মারা হয়েছে। শুনেছি এগুলো খুব বিষাক্ত। কামড় দিলে মানুষ বাঁচে না। সাপের কামড়ের আতঙ্কে কৃষি শ্রমিকরা এখানে কাজ করতে চায় না। ডিগ্রিচরের কলা বাগানের শ্রমিক হারুন অর রশীদ বলেন, সাপের ভয়ে গামবুট পড়ে কাজ করি। মাঝেমধ্যে কলাবাগানে রাসেল ভাইপার সাপ দেখা যায়।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, এ পর্যন্ত যারা রাসেলস্ ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন তাদের সবার বাড়ি পদ্মা তীরবর্তী এলাকায়। রাসেলস্ ভাইপার খুবই ভয়ঙ্কর।

এটি কামড় দেয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। সাপের কামড়ে আক্রান্ত কোনো রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সে এলে অবশ্যই চিকিৎসা দেওয়া হবে। আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সীমিত আকারে অ্যান্টিভেনম রাখা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, পদ্মা নদীর তীরবর্তী ঈশ্বরদী উপজেলায় বিগত কয়েক বছর ধরে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। পদ্মা তীরবর্তী এলাকার কৃষকদের কৃষি জমিতে যাওয়ার সময় অবশ্যই হাতে লাঠি এবং পায়ে গামবুট পরে জমিতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version