বড়দিন : জগতের আলো-যীশু

আপডেট: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ


মিথুশিলাক মুরমু

বড়দিন শব্দটিই জগতবাসীকে পুলকিত করে তোলে। এ দিনে ত্রিভুবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর জন্মে স্বর্গের দূত ও পৃথিবীর মানুষ জয়ধ্বনি করে চলেছি। ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যেকার সম্পর্ককে তিনি করেছেন সুদৃঢ়। বড়দিন সম্পর্কে ধর্ম অভিধানে বলা হয়েছে, ‘ধর্ম বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত হলেও বর্তমানে এটি বিশ্বব্যাপী প্রায় ধর্মনিরপেক্ষ একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে।’ যীশুর জন্ম সম্পর্কে ভাববাদী যিশাইয় ঘোষণা করেছিলেন, ‘আর তাঁহার নাম রাখা যাইবে ইম্মানুয়েল; অনুবাদ করিলে ইহার অর্থ আমাদের সহিত ঈশ্বর।’ ‘আমাদের সহিত ঈশ্বর’ অর্থাৎ মানবজাতির জন্যই তাঁর জন্ম। তারকাময় বিশাল আকাশে একটি উজ্জ্বল আলোর তারার উপস্থিতি পণ্ডিতগণ আলাদাভাবেই লক্ষ্য করেছিলো।

একরাশ অন্ধকারের মাঝে আলোর ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে উঠছিলো সমগ্র মেষপাল ও রাখালগণ। ক্ষুদ্রা বৈৎলেহমের সর্বোচ্চ স্থান নিশ্চিত হলো। উন্মোচিত হয়েছিলো ইতিহাসের এক আনন্দঘন সত্যের। যীশু খ্রিষ্টের জন্মে অন্ধকার বিতাড়িত হয়েছে। কর্মের মধ্যে দিয়ে তিনি সমাজে আলোর মশাল জ্বালিয়েছেন। আলো সত্য ও ন্যায্যতার প্রতীক, ভালোবাসা ও মানবাধিকারের প্রতীক। যীশু ব্যক্তি, সমাজ ও জাতিকে আলোর পথ প্রদর্শন করেছেন। আলোকিত সমাজে অন্ধকারের কোনো স্থান নেই। তাইতো যীশু বলেছেন, ‘আমিই জগতের আলো’। যীশুর মর্তে আবির্ভাব হয়েছিলেন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে, নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা এবং সুবিধাবাদী শ্রেণির মানুষের মুখোশ উন্মোচন করতে। এবারের বড়দিন এসেছে এমন একটি সময়ে, যখন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, শীতকালীন চাষের বীজ, সার এবং বিদ্যুতের অভাব।

রাজনৈতিক অস্থিরতার সাথে সামাজিক অস্থিরতাও বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। অসুরেরা সুযোগ পেয়েছে গ্রাম-বাংলার শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করে জীবনকে স্থবির এবং অচলায়তনে আবদ্ধ করতে। যীশু খ্রিষ্ট দরিদ্র ঘরে জন্মেছিলেন। মানুষের প্রতি ভালোবাসার এ রাতে আমরা একটি মাত্র আতঙ্কের মধ্যে আছি; আর তা হলো ঈশ্বরের ভালোবাসায় কোনো আঘাত করা হচ্ছে কি না, দরিদ্রদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মধ্য দিয়ে তাঁকে ব্যথিত করছি কি না! যীশু তাদের (দরিদ্র মানুষ) অত্যন্ত ভালোবাসে। তাঁর আলোর শিখা প্রজ্জ্বলিত হোক, আলোকিত হোক মানুষ ও সমাজ।
লেখক : সংবাদকর্মি

Exit mobile version