‘আমাকে উৎখাত করবে, পরে তাহলে কে আসবে’, প্রশ্ন শেখ হাসিনার

আপডেট: মে ২, ২০২৪, ২:২৫ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


যেসব রাজনৈতিক সংগঠন সরকার পতনের আন্দোলনে রয়েছে, তারা কেন জনগণের ‘সাড়া পায় না’, সে বিষয়ে নিজের ধারণার কথা বললেন টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তাঁর ভাষায়, তাকে সরিয়ে কাকে ক্ষমতায় আনতে চায়, সে বিষয়ে বিরোধীরা নিজেরাও কিছু জানে না, আর এটা তাদের রাজনীতির বড় দুর্বলতা।
থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে বৃহস্পতিবার (২ মে) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দেশের রাজনীতি নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে আসে।

দেশের অতি বাম, অতি ডান- সবই এখন ‘এক হয়ে গেছে’ বলে দুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘দুই মেরু এক হয়ে সরকারকে উৎখাত করার কথা বলছে। এই অবস্থায় আপনি জাতিকে কী বার্তা দিতে চান?’
উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাম চলে গেছে নব্বই ডিগ্রি ঘুরে, তারা নব্বই ডিগ্রি ঘুরে গেছে আর কী। আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই, বিশেষ করে আমরা যাদের অতি বাম মনে করি, তারা সব সময় প্রগতিশীল দল, তারা খুবই গণমুখি দল ইত্যাদি ইত্যাদি।

‘সেখানে আমার প্রশ্ন হলো- ঠিক আছে, তারা আমাকে উৎখাত করবে, পরবর্তীতে কে আসবে তাহলে? সেটা কি ঠিক করতে পেরেছেন, কারা আসবে? কে আসবে? কারা দেশের জন্য কাজ করবে? তারা কাকে আনতে চায়?’

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেটা কিন্তু স্পষ্ট না, আর সেটা স্পষ্ট না বলেই কিন্তু কেউ জনগণের কোনো সাড়া পাচ্ছে না। হ্যাঁ, আন্দোলন করে যাচ্ছে। কেউ বিদেশে বসে, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে বসে আন্দোলন-সংগ্রাম করেই যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। সেখানেও তো প্রশ্ন আছে! যারা আন্দোলন করে করুক, আমরা তো বাধা দিচ্ছে না।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের দমাতে পুলিশ যেভাবে বল প্রয়োগ করেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক আন্দোলন দমাতে সরকার সেই ‘কৌশল’ নেবে কী না, পরিহাসের ছলে সেই প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের নতুন পথ নিয়ে নেয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমরা যদি আমেরিকার স্টাইলে আন্দোলন বা আমাদের পুলিশকে যদি বলে দিই যে আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায় সেটা অনুসরণ করতে পারে, সেটা কি বলে দেব? আমার মনে হয় এখন আমাদের পুলিশরা আমেরিকান পুলিশদের অনুসরণ করতে পারে।

‘কারণ আমরা তো ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম, সেই ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের (বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ) কথা মনে আছে? আমি বলেছিলাম ধৈর্য ধরতে। যার কারণে পুলিশ ধৈর্য ধরায় তাদের পিটিয়ে মেরেছে, সেই সাথে তাদের হাসপাতালে আক্রমণ, গাড়ি পোড়ানো, কাজেই আমার মনে হয় এখন আমাদের পুলিশ কিন্তু আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর স্টাইলটা নিতে পারে। আমার মনে হয় সাংবাদিকরা এই ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।’

ইতিহাসের ‘সবথেকে সুন্দর নির্বাচন’ ২০২৪ সালে হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জনগণের অধিকার নিশ্চিত করেই আমরা নির্বাচন করেছি। বাংলাদেশের পুরো নির্বাচনের ইতিহাসটা দেখেন, সেই পঁচাত্তরের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, ৭৭ সালের হ্যাঁ/না ভোট থেকে যতগুলো নির্বাচন, প্রত্যেকটা নির্বাচনের যদি তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন যে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন প্রত্যেক নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চত করার নির্বাচন হয়েছে।

‘যেটা আমাদের দীর্ঘ দিনের লক্ষ্য ছিল, আমরা সংগ্রাম করেছি এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, সেটা ভুলে গেলে তো চলবে না।’
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ