দেশব্যাপী চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী আম্মানের বাড়ি ঈশ্বরদীতে

আপডেট: মার্চ ১৮, ২০২৪, ৮:০১ অপরাহ্ণ

 

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:দেশজুড়ে আলোচিত ফেসবুকে পোস্ট লিখে আত্নহত্যাকারী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মান গ্রামবাসীকেও কষ্ট দিয়েছে। অবন্তিকার সহপাঠী সেই রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। এ খবর জানার পর সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের পোড়ারদাইড় গ্রামে আম্মানের বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবন্তীকার আত্মহত্যার বিষয়টি গ্রামবাসীকেও কষ্ট দিয়েছে।

আম্মানের বাড়ি ঈশ্বরদীতে তবে অবন্তীকার আত্মহত্যার পেছনে আম্মানের প্ররোচনার অভিযোগ নিয়ে অনেকে মন্তব্য করতে চাননি। স্কুল জীবন কেটেছে আম্মানের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের শেষ সীমানা পোড়ারদাইর গ্রামের একটি মসজিদের পেছনে আম্মানের বাড়ি। এখানেই বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজন বসবাস করেন। বাবা পেশায় কৃষিপণ্য ও ভুষিমাল ব্যবসায়ী। দুই ভাইয়ের মধ্যে আম্মান ছোট। বড় ভাই রুম্মান সিদ্দিকীও ঢাকায় লেখাপড়া করেন।

আম্মানের প্রতিবেশী জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা গণমাধ্যমে খবরটা দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছি। আম্মানদের বাড়ি ঘনিষ্ঠ সাইফুল্লাহ কথা বলার এক পর্যায়ে নিজের মোবাইল দিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন আম্মানের বড় ভাই রুম্মানের সঙ্গে। রুম্মান বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা কারও সঙ্গে কথা বলতে চাই না। কথা বলবেন আমাদের আইনজীবী।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িতে এখন কোনো পুরুষ মানুষ নেই। শুধু মেয়েরা আছেন। আমাদের বাড়ির মেয়েরা বাইরের কোনো পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন না।’ এরপর তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি। এসময় আম্মানের বাবা বাড়িতে নেই বলে উল্লেখ করে সাইফুল্লাহ বলেন, তিনি এসব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চান না।

রুম্মানের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার পর সাইফুল্লাহ জানান, আম্মানের বাড়ি ছোটবেলায় আওতাপাড়া কিন্ডারগার্টেনে পড়াশোনা করেন। বাঁশেরবাদা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। এরপর থেকে সে ঢাকাতেই থাকেন।

ছুটিতে ঢাকা থেকে আম্মানের বাড়ি ঈশ্বরদীতে এসে মাঝে মধ্যে কয়েকজনকে প্রাইভেট পড়াতেন। তাদের অনেকেই আম্মান ও অবন্তীকার সঙ্গে ‘ঝামেলা’র বিষয়টি জানতেন। তাঁদের একজন পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজে অনার্সের শিক্ষার্থী সজিব। পোড়ারদাইড় গ্রামেই তাঁর বাড়ি। সজিব বলেন, ‘প্রাইভেট পড়ানোর সময় ভাইয়া (আম্মান) এক ছাত্রীর সঙ্গে কিছু সমস্যার কথা আমাকে বলেছিল। পরে আর এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় কুমিল্লায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে তাঁর মা তাহমিনা বেগম মামলা করেন। মামলায় রায়হান সিদ্দিকি আম্মান ও প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে আসামি করা হয়। ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকি আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাঁদের কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবন্তিকা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ