উপজেলা নির্বাচনে শেষ সময়ে দীর্ঘ লাইন নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি

আপডেট: মে ৮, ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


ভোট কেন্দ্র সারাদিনই ছিলো প্রায় ফাঁকা। দুপুরের পর দুই-একজন করে ভোটার আসতে থাকে। ভোট শেষ হওয়ার আধাঘন্টা পূর্বে দীর্ঘ সারি পড়ে অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে। ৪ টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অনেক কেন্দ্রে ভোটার থাকায় ভোট গ্রহণ চলে প্রায় ৫ টা পর্যন্ত। আর এবারের নির্বাচনে পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

প্রথম ধাপের ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ সময়ে কেন্দ্রে ভোটার থাকা ও ব্যালটে ভোট গ্রহণ করায় গণনা শুরু হয়েছে দেরিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলার অধিকাংশ কেন্দ্রে দেরিতে ভোট গণনা শুরু হয়। আবার ৪ টার আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারায় বেশকিছু ভোটারকে ভোট দিতে দেয়া হয় নি। এছাড়া গোদাগাড়ীতে একজন ভোটার ভোট দিয়ে সে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়৷ বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তাকে আটক করা হয়েছে।

এরআগে, সারাদেশের ন্যায় বুধবার সকাল ৮ টায় একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কেন্দ্রগুলোতে দুপুরের আগে ভোটার না থাকায় নানা গুঞ্জন তৈরি হয়।
গোদাগাড়ীর নলত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারীদের দীর্ঘ লাইন ছিলো৷ শেষ সময়ে অনেকেই ভোট দিতে না পেরে ঘুরে গেছেন।

কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী যারা ৪ টার আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে, তাদের ভোট নেয়া হয়েছে। এ ভোটগুলো নিতে মোটামুটি ঘণ্টাখানেক দেরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার ভোটার। এরমধ্যে ১২ শো ১৩ টি ভোট কাস্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ৪ টার পরে যারা এসেছে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি। আর এখানে নারী ভোটার বেশি। ভোট নিয়েও উদাসীন। একারণে অনেকে ৪ টার পরে ভোট দিতে আসে৷
শেষ সময়ে আসা কয়েকজন ভোটার জানান, কাজ-কর্ম সেরে ভোট দিতে এসেছি। তাই দেরি হয়েছে। অন্য কোন কারণ নেই।

তবে উপজেলা নির্বাচনে পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি ছিলো খুবই কম। চোখে পড়ার মতো নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো। দল বেঁধে নারীরা ভোট দিতে এসেছিলেন।
আদিবাসী নারী ভোটার কৃষ্ণা দেবী বলেন, ভোট মানেই নারীদের মাঝে ভিন্ন উৎসাহ উদ্দীপনা থাকে। পাড়ার সবাই মিলে এক সঙ্গে এসো ভোট দিয়েছি৷ সুন্দরভাবে ভোট দিতে পেরেছি।

রাজশাহী জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, নির্বাচন সুন্দরভাবে হয়েছে। গ্রামে সেকেন্ড হাফে নারী ভোটাররা দেরিতে আসে। একারণে কিছু কেন্দ্রে ভোট গণণা দেরিতে শুরুতে হয়েছিলো। আর সার্বিকভাবে নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশিই ছিলো৷

তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি। একজনকে আটক করা হয়েছে। সে ভোট দিয়ে সে চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এটা অন্যায়। একারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপের নির্বাচনে গোদাগাড়ী ও তানোর দুই উপজেলার মোট ১৬৮ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে ১৫৫ টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ ও ১৬ জন আনসার সদস্য রয়েছে। গোদাগাড়ীতে ৫ প্লাটুন ও তানোরে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এই দুই উপজেলায় ১৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া র‌্যাব ও পুলিশের টহল সার্বক্ষনিক নজরদারি করেছে।

গোদাগাড়ী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ উপজেলায় মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১ শত ৭টি, ভোট কক্ষ ৭ শত ১৫টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৮১ হাজার ১ শত ৬০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮ শত ৭০ জন ও নারী ভোটার ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ২ শত ৮৯ জন এবং হিজড়া ভোটার ১ জন।

অন্যদিকে তানোর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬১টি, ভোট কক্ষ ৪ শত ২৫টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ১ শত ৭৩ জন। এ উপজেলার মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮১ হাজার ৯শত ৭ জন ও নারী ভোটার ৮৪ হাজার ২ শত ৬৬ জন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ