চলে গেলেন ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু II জানাজা রাজশাহী কলেজে ১১.৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক :রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিক এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু (৯৪) আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি,,, রাজিউন)।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন, ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত প্রসিকিউটর অ্যাড. সৈয়দ হায়দার আলী।

তিনি জানান, বার্ধক্য ও ঠাণ্ডাজনিত কারণে তিনি মারা গেছেন। তার জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গোলাম আরিফ টিপু ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে মহান ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বে ছিলেন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মহান ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।
গোলাম আরিফ টিপু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান।

তিনি ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের (তৎকালীন মালদহ জেলা, ব্রিটিশ ভারত) শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে গোলাম আরিফ টিপু দ্বিতীয়। তিনি কালিয়াচর বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক ও রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। একই কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গোলাম আরিফ টিপু। দেশের আলোচিত নীহারবানু হত্যা মামলায় তিনি আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০-এর দশকের পূর্ব সময়ে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সঙ্গে রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন।