চাঁপাইয়ে অর্ধশতাধিক যুবককে বিদেশের পাঠানোর নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ

আপডেট: মে ৭, ২০২৪, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:


বিদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অর্ধশতাধিক যুবকের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। উচ্চ বেতনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে প্রায় ৫০ জনের কাছে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে এক ভুয়া এজেন্ট। তার নাম ইউসুফ আলী। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলকার ধাপাপাড়ার বাসিন্দা। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত।

বিদেশে লোক পাঠানোর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া ইউসুফের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। তবে অভিযুক্ত ইউসুফ আলী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে হাতিয়ে নেয়া কোটি টাকা আত্মসাতের সব ধরনের চেষ্টা করছেন। প্রতারণার টাকায় শহরের ধাপাপাড়ায় নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন। অভিযুক্ত ইউসুফ আলী বিদেশে লোক পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন। তার দাবি, তিনি ১৮ জনকে ইতালি পাঠিয়েছেন। কয়েকজন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। তিনি তাদের টাকা ফেরত দিবেন।

জানা গেছে, ইতালি যাওয়ার জন্য ইউসুফকে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন অনেকে মানুষ। কয়েক বছর আগে টাকা দিলেও তারা যেতে পারেনি, টাকাও ফেরত পায়নি। ইউসুফ আলীর মালিকানাধীন মাহিয়া ট্রাভেলস এণ্ড ট্যুরস নামের প্রতিষ্ঠানটির বিদেশে কর্মী পাঠানোর এখতিয়ার নাই। তারপরও নিজেকে এজেন্ট দাবি করে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে। বিদেশে লোক পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং লাইসেন্স (এলআর) থাকা বাধ্যতামুলক।

এই ইউসুফ চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে পাসাপোর্ট সংগ্রহ করে ঢাকার রুবেল নামে ইতালি এবং বাংলাদেশের এক দ্বৈত নাগরিকের কাছে দেন। প্রতিটি পাসপোর্টের সাথে আড়াই লাখ হতে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত সংগ্রহ করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই যুবক চাকরি নিয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য ইউসুফ আলীকে ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেয়। সাথে পাসপোর্টও। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিনেও তাদের ইতালি পাঠাতে পারেনি তিনি। তাদের বিমানের ভুয়া টিকিটও দেয় ইউসুফ। পরে ঢাকার রুবেল নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে দুজনে আরও ২৬ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি গেছেন। তবে ইউসুফ তাদের ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা এখনও ফেরত দেয়নি। পরে তাদের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।

১২ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালি যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট আর টাকা দেয়া ৪০ জনের বেশি লোক এখনও স্বপ্নের বিদেশ যেতে পারেনি। পাসপোর্ট ও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেয়নি ইউসুফ । প্রতারিত হয়ে এখন পথে পথে ঘুরছেন তারা।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আসগর আলী জানান, ইতালি পাঠানো নিয়ে প্রতারণার বিষয়ে একটি অভিযোগ তার কাছে আছে। বাদী সমাধানের মাধ্যমে তার টাকা ফেরত চান। তিনি চেষ্টা করছেন যাতে সামাজিকভাবে সমাধান হয়ে যায়। সমাধান না হলে বাদীকে আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়া হবে। আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে পুলিশের সরাসরি আইন প্রয়োগের সুযোগ সীমিত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউসুফ আলী বলেন, তিনি ১৮ জনকে ইতালি পাঠিয়েছেন। যাদের অভিযোগ দেয়া হয়েছে তিন মাস আগে তাদেও তিনিই ইতালি পাঠিয়েছেন বলে দাবি করনে। তবে বিদেশ পাঠানো জটিলতা তৈরি হওয়ায় কয়েকজন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। তিনি তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ