থাই সীমান্তবর্তী শহর মিয়াবতী দখল করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা

আপডেট: এপ্রিল ১২, ২০২৪, ৬:৩০ অপরাহ্ণ

থাই সীমান্তবর্তী শহর মিয়াবতী দখল করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা

ছবি: রয়টার্স

সোনার দেশ ডেস্ক:


থাই সীমান্তের কাছে গুরুত্বপূর্ণ শহর মিয়াবতী বিদ্রোহীরা দখল করার পর থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এই শহর দখল ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিদ্রোহীরা শক্তিশালী এবং মিয়ানমারের সামরিক সরকার দুর্বল হচ্ছে। বিমান হামলার আশঙ্কায় মিয়ানমার থেকে দলবেঁধে মানুষ থাইল্যান্ডের দিকে ছুটছেন। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে একটি সীমান্ত ক্রসিঙে তারা ভিড় করেছেন। রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়াবতী শহরের পতন মিয়ানমার জান্তার জন্য একটি বড় ধাক্কা। এমনিতেই দেশটির অর্থনীতি সংকটে রয়েছে। সীমান্ত বাণিজ্যের জন্য শহরটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ শহরটি দখলের পর হামলায় নেতৃত্ব দেয়া কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) নামের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।

মিয়াবতী শহরের এক নারী ময়ে ময়ে টেঠ সান নিজের ৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ডে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, আমি বিমান হামলার আশঙ্কায় ভীত। এসব হামলায় খুব বিকট শব্দ হয়, যা আমার বাড়ি কাঁপিয়ে দিয়েছে।
৩৯ বছর বয়সী এই মা সীমান্তে একমাত্র সক্রিয় ক্রসিং মায়ে সটে দিয়ে থাইল্যান্ড এসেছেন। তিনি বলেছেন, বোমার শব্দে নিরাপত্তার শঙ্কায় তারা বাড়ি ছেড়েছেন।

তিনি বলেন, তাই আমি এখানে পালিয়ে এসেছি। থাইল্যান্ডে তারা বোমা ফেলতে পারবে না।
থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্নপ্রি বাহিদ্দা-নুকারা মায়ে সট ক্রসিং পরিদর্শন করবেন। এটি মিয়াবতী শহরের ময়েই নদীর তীরে অবস্থিত।
মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্র ঝাও মিন টুন দেশটির সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের কয়েকজন সেনা আত্মসমর্পণ করেছে। কারণ তাদের সঙ্গে পরিবার ছিল। তাদের ফিরিয়ে আনতে থাইল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এই বিদ্রোহ মিয়ানমার জান্তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে রাজধানী নেপিদোতে সামরিক স্থাপনায় সমন্বিত ড্রোন হামলার চেষ্টা করেছে বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার মায়ে সটকে সংযুক্ত করা একটি সেতু দিয়ে মিয়ানমারের প্রায় ২০০ সেনা পিছু হটে। এর ফলে কেএনইউ মিয়াবতী শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়।

ব্যাংককের থাম্মাসাত ইউনিভার্সিটির সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ডুলিয়াপাক প্রিচারুশ বলেছেন, তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখনও পাল্টা হামলার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। এতে সহযোগিতা করতে পারে দেশটির বিমানবাহিনী।
তিনি বলেছেন, ফলে আসন্ন দিনগুলোতে লড়াই আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পালানো মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ
মিয়ানমারে সংঘাত তীব্র হওয়ার ফলে মিয়াবতী থেকে মায়ে সট ক্রসিং দিয়ে থাইল্যান্ড যাওয়া মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার মানুষ সীমান্ত পার হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন বলেছেন, মিয়ানমারের লড়াই তাদের আকাশসীমায় ছড়িয়ে পড়া উচিত হবে না।
এর আগে রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, মিয়ানমার জান্তা শক্তি হারাচ্ছে। তিনি সামরিক সরকারের সঙ্গে আলোচনায় জোর দিয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ