দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

আপডেট: জুন ৩০, ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:


মহেন্দ্র সিং ধোনি মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নুয়ান কুলাসেকেরার বলে ছয় হাঁকাচ্ছেন, এটাই গত ১৩ বছর ধরে ভারতের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ছিল। একটা বিশ্বকাপের জন্য এরপর থেকে হন্যে হয়ে ঘুরেছে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু আসেনি। সাতমাস আগেই নিজেদের মাটিতে হেরেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল।

সেই আক্ষেপ মিটল নিজ দেশ থেকে বহুদূরের মাটিতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোজের কড়া রোদের নিচে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। ১৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যান ইন ব্লুরা। সেটা দিয়েই শিরোপার পথে নেমেছিল ধোনির ভারত। লম্বা অপেক্ষা শেষে আবারও সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই শিরোপাখরা ঘুচালো দলটা।

বার্বাডোজে উৎসবের মঞ্চ আগেই সাজিয়ে রেখেছিল ভারত। ১৭৬ রানের শক্ত সংগ্রহ তারা দাঁড় করায় ফাইনালের মঞ্চে। বল হাতে শুরুটাও ছিল চ্যাম্পিয়নদের মতোই। মাঝে কুইন্টন ডি কক আর হেনরিখ ক্লাসেন দাঁড়ালেন দেয়াল হয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার জয়টাও ছিল সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে যে লেগে আছে চোকার্স তকমা। ২৪ বলে ২৬ রানের সমীকরণটাই আর মেলানো হয়নি তাদের। আর্শদ্বীপ সিং আর জাসপ্রিত বুমরাহ একের পর এক ডট ডেলিভারিতে চাপ বাড়িয়েছেন। সঙ্গী ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্নায়ুচাপের লড়াইয়ে জয় হলো ভারতেরই।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়ার ওই ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি লাইনে মিলারকে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরালেন সুর্যকুমার যাদব। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ শেষ হয়ে গেল সেখানেই। শেষ ওভারে এলো ৮ রান। ব্যর্থ হলো হেনরিখ ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত সেই ইনিংস। ৭ রানের জয়ে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ভারত।

শেষ ওভার। প্রথম বল। আউটসাইড-এজে চার রাবাদার। পরের বলে ব্যাটে লাগাতে পারেননি, বাই থেকে এসেছে সিঙ্গেল। মহারাজকে এরপর ব্লকহোলে করেন পান্ডিয়া, লেগ বাই থেকে ১ রানের বেশি আসেনি। ২ বলে দরকার ১০ রান। ক্লাসেন ডাগআউটে বিশ্বাস করতে পারছেন না কিছুই। ভারত বিশ্বাস করছে—মাঠে এবং গ্যালারিতে। হয়তো আরও অনেক জায়গায়। পান্ডিয়া ওয়াইড করে অবশ্য ঝুলিয়ে দিলেন ব্যাপারটি। শেষ ২ বলে ২ চারে সম্ভব সুপার ওভার। পঞ্চম বলে লং অফে রাবাদা ধরা পড়েছেন। কোহলি-রোহিত আর দ্রাবিড়ের উদ্যাপনই বলে দিচ্ছিল—শিরোপা সময়ের অপেক্ষা। শেষ বলে ১ রানের বেশি আসেনি। ভারত চ্যাম্পিয়ন!

শেষ বলটা করার পর শুয়ে পড়লেন পান্ডিয়া। ওদিকে রোহিত শর্মাও তাই। পান্ডিয়া এরপর কেঁদেই ফেলেছেন। আবেগী ঋষভ পন্তও। এ শিরোপার অর্থ ভারত ক্রিকেটারদের কাছে অ-নে-ক। ৩০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৩০ রান। এর আগে কখনো ফাইনালে আসেনি দক্ষিণ আফ্রিকার। শিরোপাটি হাতছোঁয়া দূরত্বে তখন তাদের। বুমরার ওভারে এরপর এল ৪ রান। পরের ওভারে তিনি দিলেন ২ রান। মাঝে পান্ডিয়ার ওভারে প্রথম বলে আউট ক্লাসেন। ভারত বিশ্বাস রেখেছিল। চাপ সামলেছে তারা। অন্যদিকে হাতের মুঠোয় আসা ম্যাচটি এক অর্থে পড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। দুদলই ফাইনালে এসেছিল অপরাজিত থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা হারল এরপর। ভারত রইল অপরাজিত।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ