নির্বাচনে হেরে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃষকলীগ নেতা

আপডেট: মে ২২, ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ণ


পাবনা প্রতিনিধি:


৬ষ্ট উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটে হেরে গিয়ে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মেছবাহুর রহমান রোজ।
তিনি জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ো চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ফলাফল ঘোষণার এক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ৯টার দিকে ‘রোজ মেছবাহুর রহমান’ নামে তার নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মেছবাহুর রহমান একটি স্ট্যাটাস দেন।

সেখানে তিনি লেখেন, ‘৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে ২য় ধাপে পরাজিতের অভিজ্ঞতা থেকে আগামী ৩য় ও ৪র্থ ধাপের প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ, ইভিএম (ভুয়া) সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, পদ্ধতি ও ক্ষমতাশালীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ করছি।’
তার ফেসবুক থেকে এই স্ট্যাটাস দেয়ার পরপর রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সুধী মহলে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। উঠে সমালোচনার ঝড়।

আওয়ামীলীগ তথা সরকারি দলের একজন সক্রিয় পদধারী নেতা হিসেবে এমন সরকারের উদ্যোগে বিরোধিতা করায় দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এম মেছবাহুর রহমান বলেন, ‘ভোট চলাকালে চারটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখেছি নির্বাচনের সাথে যুক্তরা সরাসরি ভোটারকে গোপন কক্ষে নিয়ে গিয়ে ভোট নিয়ে নিচ্ছেন। ইভিএম পদ্ধতিটা ভুয়া বলেই মনে হয়েছে। তাই পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীদের সতর্ক হতেই পোস্ট করেছি।’

সরকারি দলের একজন পদধারী নেতা হয়ে সরকারের নেয়া আধুনিক ও যুগোপযোগী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিদেশে থেকেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত। আওয়ামীলীগ চুরি করবে, অন্যায় করবে এটা মেনে নিতে পারবো না।’

কোথায়ও কোন অভিযোগ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মেছবাহুর রহমান রোজ বলেন, ‘জানি অভিযোগ করে প্রতিকার পাবো না। তাই কোথায়ও কোনো অভিযোগ করিনি। নির্বাচনের আগেও নানারকম সমস্যা হয়েছে৷ কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

বিষয়ে জানতে ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতিটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এখানে কারচুপি, অনিয়ম করার সুযোগ নেই। ভোটাররাও খুশি। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে জনবিচ্ছিন্ন মানুষ হয়ে প্রতিটা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের দলীয় নেতা হয়ে সরকার তথা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া বা কটুক্তি করাটা খুবই দু:খজনক ব্যাপার।’

এ বিষয়ে ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফ আহমেদ বলেন, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। কেউ অভিযোগ দিলে খতিয়ে দেখে কমিশনের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ৪৫টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল (মোটর সাইকেল) ৩১ হাজার ৫৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এম মেছবাহুর রহমান রোজ (ঘোড়া) পেয়েছেন ২ হাজার ৬৭৯ ভোট। অপর প্রার্থী মো. বাকিবিল্লাহ (আনারস) পেয়েছেন ৫৪১ ভোট। এই উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৩.৭৯ শতাংশ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ