পদ্মা নদী থেকে একদিনে স্কুল শিক্ষার্থীসহ তিনটি লাশ উদ্ধার

আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪, ৯:৩০ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক ও বাঘা প্রতিনিধি:


রাজশাহীর পদ্মা নদী থেকে একদিনে রোববার (২১ এপ্রিল) স্কুল শিক্ষার্থীসহ পৃথকভাবে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ পবা উপজেলার হাড়ুপুর নবগঙ্গা ঘাট থেকে দুইজনের ও বাঘা উপজেলায় চকরাজাপুর এলাকার খেয়াঘাট থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস একটি ডুবুরি দল।

জানা গেছে, রাজশাহীর পদ্মায় গোসলে নেমে স্কুল শিক্ষার্থীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেল চারটার দিকে নগরীর উপকণ্ঠ পবা উপজেলার হাড়ুপুর নবগঙ্গা ঘাট থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস একটি ডুবুরি দল।

এর আগে রোববার দুপুর একটার দিকে গোসলে নেমে তলিয়ে যায়। নিহতরা হলেন, রাজশাহী নগরীর সায়েরগাছা এলাকার বাবু হোসেনের ছেলে বাপ্পি হোসেন (১৬)। সে এ বছর রাজশাহী কোর্ট অ্যাকাডেমি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। অপরজন মনির হোসেন (২০)। তিনি একই এলাকার শাহিন হোসেনের ছেলে। মনির পেশায় থাই মিস্ত্রি।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে দুপুরে কয়েকজন একসঙ্গে নদীতে গোসলে নামে। এসময় বাপ্পি ও মনির ডুবে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে ডুবুরি নিয়ে অভিযান চালিয়ে রোববার বিকেল চারটার দিকে দুইজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

রাজশাহী নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে রাজশাহীর বাঘায় পদ্মায় নিখোঁজ আসাদ হোসের নামে যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর রাজশাহী ফায়াস সার্ভিসের একটি ডুবুরি রবিবার (২১ এপ্রিল) দুুপুর ১টার দিকে চকরাজাপুর পদ্মা নদীর খেয়াঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। আসাদ হোসেন উপজেলারাপুর চরের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে চকরাজাপুর পদ্মা নীর খেয়াঘাট এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে টিনের ডুঙা ডুবে নিখোঁজ হয়।

জানা যায়, আসাদ হোসেন টিনের তৈরি ডুঙা নিয়ে মাছ ধরতে চকরাজাপুর পদ্মা নদীর খেয়াঘাটে পশ্চিমে যাচ্ছিল। সে পদ্মার মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছলে পদ্মার পাকে পড়ে ডুবে যায়। তার সাথে থাকা দুইজন এগিয়ে গিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি। পরে চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় নৌকা ও জাল নিয়ে খোঁজ করে তাকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন রবিবার দুপুরে চকরাজাপুর পদ্মা নীর খেয়াঘাট এলাকায় থেকে পদ্মার তলদেশ থেকে ডুবুরি দল লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

এ বিষয়ে আসাদের মেজো ভাই কায়েস উদ্দিন বলেন, আমরা গরীব মানুষ। পদ্মায় মাছ ধরে সংসার চালায়। ভাই দুপুরে টিনের তৈরি ডুঙা নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে ডুবে নিখোঁজ হয়। পরে লাশ পেয়েছি।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়া বলেন, স্থানীয়ভাবে নৌকা নিয়ে খোঁজ করে না পেয়ে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে অবগত করা হয়। পরে তারা এসে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে রাজশাহী চারঘাট নৌ-পুলিশের ইনচার্জ এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ফায়াস সার্ভিসের একটি দল অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তবে এ বিষয়ে বাঘা থানায় একটি অপমৃত্যুর সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে অভিযান লাশ উদ্ধার করা করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯ এপ্রিল উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ছেলে সিয়াম হোসেন সজিব (১০) মুশিদপুর খেয়াঘাটে গোসলে করতে নেমে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। ১৪ এপ্রিল চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়ার মানিকের চরের পদ্মা নদীর ঘাটে গোসলে নেমে ঝিলিক ও জান্নাতী খাতুন নামের দুই শিশু নিখোঁজ হয়। এরমধ্যে জান্নাতির লাশ উদ্ধার হলেও ঝিলিকের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। জান্নাতি খাতুন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বাংলা বাজার চর এলাকার বাসি›া আবুল কাশেম মন্ডলের মেয়ে এবং ঝিলিক চুয়াডাঙ্গার জয়দেবপুরের পাটঘাট গ্রামের মনির উদ্দিনের মেয়ে। তারা চৌমাদিয়ার মানিকের চরের আবদুল মান্নানের মেয়ে হালিমার বিয়ে খেতে এসে পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয়।