পাবনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আপডেট: মার্চ ২০, ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ণ


পাবনা প্রতিনিধি:জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনায় মামলা দুইটি দায়ের করেন উপ-সহকারী পরিচালক মনোয়ার হোসেন।

যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা হলেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মশিপুর গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জোমেলা খাতুন। সাইফুল ইসলাম ২ নং গাঁড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আর তার স্ত্রী ডেইরী ফার্মের ব্যবসায়ী।

দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনা’র উপ-পরিচালক খায়রুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ায় দুদক থেকে তাকেসম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয়া হয়। তিনি ২০২৩ সালের ১২ মে নোটিশ পান এবং ৪ জুলাই সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

সাইফুল ইসলাম তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে সর্বমোট ২ কোটি ৫৫ লাখ ৯২ হাজার ৪৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন। কিন্তু তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এখানে তিনি ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

এছাড়া সাইফুল ইসলামের নামে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ১৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। সুতরাং পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের মূল্য ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪৩ টাকা।

দুদকের অনুসন্ধানে মোট অর্জিত সম্পদের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় মোট এক কোটি ৬০ লক্ষ ২২ হাজার ৬৭৯ টাকা। সুতরাং আয় বাদে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম চার কোটি ৩৪ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৬৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অ-সঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর-১২।
অপরদিকে একই অভিযোগে নোটিশ পেয়ে একইদিনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের স্ত্রী জোমেলা খাতুন।

দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৫ লাখ ২৬ হাজার ২১৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন দুদকে। কিন্তু সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ১৮ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

অর্থাৎ জোমেলা খাতুন কমিশনে-দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৩৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৭৯৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন পূর্বক মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
এছাড়া তার নামে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সুতরাং পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের মূল্য ১ কোটি ৩৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা।

পক্ষান্তরে জোমেলা খাতুনের আলোচ্য সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় মোট ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩০ টাকা। অর্থাৎ আয় বাদে তিনি ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার ৯১৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর-১১।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনা’র উপ-পরিচালক খায়রুল হক জানান, মামলা দু’টির তদন্ত করবে দুদক

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ