পাবনায় গৃহবধূকে হত্যার পর বাথরুমে মরদেহ ঝুঁলিয়ে রাখার অভিযোগ স্বামী-সন্তানের বিরুদ্ধে

আপডেট: জুন ২৪, ২০২৪, ২:২৮ অপরাহ্ণ


পাবনা প্রতিনিধি :


রিক্তা খাতুন (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ বাথরুমের ভিতরে ঝুঁলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৩ জুন) দুপুরে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর শগুইনা গ্রামে রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও তার ছেলে পলাতক রয়েছেন।

নিহত রিক্তা খাতুন উপজেলার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের শগুইনা পশ্চিমপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামানিকের স্ত্রী ও আমিনপুর থানার নয়াবাড়ি গ্রামের মোবুদ্ধি শিকদারের মেয়ে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহতের মাদকাসক্ত ছেলে দুরুন্ত (২২) প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করতো। টাকা না দিলে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করতো। মারধরের শিকার হয়ে গৃহবধূ রিক্তা বিভিন্ন সময় বাবার বাড়িতে চলে যেতেন।

এক পর্যায়ের তার স্বামী এসে বুঝিয়ে আবার নিয়ে যেতেন। এভাবে মাঝেমধ্যেই তাদের সংসারে অশান্তি চলতো। রোববার দুপুরের দিকে প্রতিবেশি একজন বাথরুমের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু বুঝতে পেরে এসে দেখে মরদেহ ঝুঁলিয়ে আছে। তখন তিনি আত্মীয় স্বজনকে খবর দেন।

পরে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পরিবারের মানুষজন থানা পুলিশে খবর দিলে তারা মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।

নিহত রিক্তা খাতুনের বড় বোনের মেয়ে আনোয়ারা খাতুন দুলি অভিযোগ করে বলেন, আমার খালার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। মাদকের জন্য টাকা চাইতো। না দিলে বাবা ও ছেলে মিলে খালাকে বেধড়ক মারপিট করতো। মারধরের শিকার হয়ে মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে চলে আসতেন।

আমাদের আত্মীয় স্বজনদের সামনে খালার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন তারা। খালা আমাদের বিভিন্ন সময় বলতেন আমাকে বোধ হয় মেরে ফেলবে তারা।

আনোয়ারা খাতুন আরো বলেন, আমার খালার মরদেহ উদ্ধারের কথা শুনে এখানে এসে দেখি পুরো শরীর জখম হয়ে আছে। নাক-কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আমার খালাকে বাপ-বেটা মিলে পিটিয়ে হত্যা করে বাথরুমের মধ্যে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। এ হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বাবা মোবুদ্ধি শিকদার বলেন, মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহতের স্বামী ও ছেলেসহ পুরো পরিবার নেশাগ্রস্ত। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছবি। মামলার পর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।