‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ বাতিলের দাবিতে মুর্শিদাবাদে আন্দোলনের প্রস্তুতি তৃণমূলের

আপডেট: জুন ২৪, ২০২৪, ৯:০৭ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক:


কেন্দ্রের এনডিএ সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অন্ধকারে রেখে একতরফাভাবে ‘ফারাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করার সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন ফারাক্কার বহু মানুষ। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন পেলে এই ইস্যুতে এবার ফারাক্কাতে বড়সড়ো আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল, তৃণমূল কংগ্রেস।

ফারাক্কা ব্যারেজ সূত্রে জানা গেছে- গঙ্গার জলবণ্টন দিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তির মেয়াদ রয়েছে আগামী বছর পর্যন্ত। এই চুক্তি অনুসারে শুখা মরশুমে দুই দেশ ফারাক্কা ব্যারেজের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জল পেয়ে থাকে।
মুর্শিদাবাদের বহু বাসিন্দার অভিযোগ এই জলবণ্টন চুক্তির ফলে বাংলাদেশ লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অংশের সাধারণ মানুষ।

ফারাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন করে চুক্তির সময় পশ্চিমবঙ্গের কোনও প্রতিনিধিকে সেখানে ডাকা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে লাগু থাকা এই আন্তর্জাতিক জল চুক্তির ফলে আমরা দেখেছি শুখা মরশুমে মুর্শিদাবাদের বড় অংশ গঙ্গা নদীর জল পায় না। কিন্তু বর্ষাকালে ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সমস্ত গেটগুলো খুলে দেওয়ার ফলে মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অংশ জলে ভেসে যায়।”

তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেন, ‘এই জল চুক্তি হওয়ার পর মালদা জেলার কালিয়াচক -বৈষ্ণবনগর থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা -সামশেরগঞ্জ -সুতি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অংশের বহু জনপদ গঙ্গা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে। বছর বছর বহু মানুষের বাড়ি ঘর, চাষের জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। অথচ সেই ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়ে দেশের কেন্দ্র সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুর্শিদাবাদের গঙ্গা নদীর ভাঙন প্রতিরোধের জন্য আমরা বহুবার ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে নদীর দু’পার বাঁধানো এবং ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেন্দ্র সরকার একদিকে যেমন ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না, অন্যদিকে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ নদীর ড্রেজিংকরে তার নব্যতা বৃদ্ধির বিষয়ে উদাসীন। গঙ্গা নদীর ভাঙনে উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া মানুষেরা কোথায় থাকবে সেই বিষয়েও ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ উদাসীন।’

মনিরুল বলেন, ‘ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের হাতে প্রচুর অব্যবহৃত জমি রয়েছে। আমরা বহুবার দাবি তুলেছি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সেখানে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেই অনুরোধে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি।’

তিনি জানান, ‘কেন্দ্র সরকার না দিলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উদ্যোগী হয়ে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতামত নিয়ে কেন্দ্র সরকার এই চুক্তি পুনর্নবীকরণের জন্য উদ্যোগী হলে তা সকলের পক্ষেই ভাল হত।’

তৃণমূল বিধায়ক জানান, ‘আমি আগামীকালই কলকাতাতে যাচ্ছি। সেখানে রাজ্য নেতৃত্বের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তারা যদি অনুমোদন দেন তাহলে এই জল চুক্তি বাতিলের দাবিতে আমরা ফারাক্কাতে বড়সড়ো আন্দোলনের প্রস্তুতি নেব।’
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ