নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ পদকে ভূষিত করেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের মুক্তি-কামী নিপীড়িত মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন। বিশ্ব শান্তি পরিষদের শান্তিপদক জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ। এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, আন্তর্জাতিক সম্মান। তার এই পদকপ্রাপ্তি সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশকে অন্যান্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘসহ বিশ্বসংস্থার কাছ থেকে স্বীকৃতি ও সদস্য পদ লাভ ত্বরান্বিত হয়েছিল।
১০ অক্টোবর ১৯৭২ সালে বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় পৃথিবীর ১৪০টি দেশের এই পরিষদের ২০০ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শোষিত ও বঞ্চিত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তথা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্ব শান্তি পরিষদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘জুলিও কুরি’ পুরস্কারে ভূষিত করা ছিল তৎকালীন বিশ্ব পরিস্থিতিতে অসামান্য একটি ঘটনা। পরের বছর ২৩ মে ১৯৭৩ সালে বিশ্ব-শান্তি পরিষদের উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশীয়-শান্তি সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রদান করেছেন ওই পরিষদ’র সেক্রেটারি-জেনারেল রমেশ চন্দ্র।
উল্লেখ্য, মেরি কুরি ও পিয়েরে কুরি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী। বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে এই বিজ্ঞানী দম্পতির অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে ও মানবতার কল্যাণে শান্তির স্বপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রদান করে থাকে।