বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপিত ‘দেশের প্রতিটি ধূলিকণায় শহিদের রক্ত মিশে আছে’

আপডেট: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩, ১১:১৮ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দিনব্যাপি নানা কর্মসূচি পালন করে সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন। দিনব্যাপি কর্মসূচির মধ্যে ছিল সূর্যোদয়ের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা, স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পৃথিবীতে ১০টি দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পৃথিবীতে আলোড়ণ সৃষ্টি করেছিল একটি কারণে, তা ছিল জনযুদ্ধ। আজ আমরা যে স্বাধীন দেশ দেখছি এর ইতিহাস অনেক নির্মম। ৩০ লাখ শহিদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।

৩০ লক্ষ শহিদের দেহগুলো যদি একটার পর একটা রাখা হতো ৭২০ কি.মি. দীর্ঘ হতো এবং একটার উপর আরেক একটা রাখলে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে বেশি উঁচু হতো। তাদের রক্তগুলো একত্রিত করলে দেড় কোটি লিটার হতো যা পদ্মা নদীতে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয় তার সমান। এই শহিদরা যদি হাতে হাত রেখে দাঁড়াতো তাহলে ১১ শো কি.মি. হতো যা টেকনাফ থেকে শুরু করে তেঁতুলিয়া পার হয়ে যেত। আমাদের দেশের প্রতিটি ধূলিকণার সঙ্গে শহিদের রক্ত মিশে আছে। আমাদের কর্মে, আচরণে আমরা যদি তা মনে রাখি তা হলে আমরা অন্যায় বা খারাপ কিছু করতে পারবো না।

রাজশাহী জেলা প্রশাসন: দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বিজয় দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা পুলিশ লাইন্সে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সেই সাথে দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
এসময় জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী, বীর প্রতীক প্রফেসর (অব.) ড. মু. শামসুল আলম।

 

নগর আ’লীগ:
কর্মসূচিসমূহের মধ্যে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১০টায় দলীয় কার্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান প্রচার করা হয়। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, নগর শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আকতার আলী, জেলা শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার সিদ্দিক, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, তথ্য ও গবেষণা-বিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক-সম্পাদক ফিরোজ কবির, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক-সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক-সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার, সদস্য নজরুল ইসলাম তোতা, মুশফিকুর রহমান হাসনাত, অ্যাড. শামসুন্নাহার মুক্তি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা প্রমুখ।

শাপলা:
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে র‌্যালি ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মোহসিন আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শাপলা কম্পিউটার এন্ড কনজুমারস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সানজিদা রহমান। সভাপতিত্ব করেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি আইয়ুব আলী।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ