বাংলাদেশ একদিন চাঁদে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: জুন ২৭, ২০২৪, ২:৫৫ অপরাহ্ণ

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সোনার দেশ ডেস্ক :


বাংলাদেশ একদিন চাঁদে যাবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রজন্মকে সেভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষ করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘একসময় আমাদের চাঁদেও যেতে হবে, চাঁদও জয় করতে হবে। সেই বিজ্ঞানসম্পন্ন জ্ঞান… সেই জ্ঞানটা যেন আমাদের শিশুরা এখন থেকে পায় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (জুন ২৭) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ এবং ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মহাকাশ গবেষণা এবং এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, অ্যারোস্পেস এবং অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটিও করেছি। অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারও করে দিয়েছি। গবেষণা এবং সেই সাথে আমাদের শিশুদের এখন থেকে সেভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকারের আন্তরিকতা ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় আমরা একটা সুষম, জনকল্যাণমুখী, সর্বজনীন, মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা করতে চাই। আর শুধু ওই কেতাবি পড়ে না, ছোট ছোট শিশুদের ভেতরে যে মেধা-মনন সেগুলোও তো আমাদের বের করে আনতে হবে। তাদের সুযোগ দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ভেতরে যে একটা কিছু করার ক্ষমতা আছে সেটা যাতে বিকশিত হয় সেই সুযোগটা সৃষ্টি করা দরকার। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমরা শিক্ষা কারিকুলাম-আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানের মধ্যে নিয়ে এসে প্রত্যেক স্কুলে ইতোমধ্যে, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিবো। প্রথমে এটা মাধ্যমিক থেকে শুরু করেছিলাম এখন আমাদের লক্ষ্য প্রাইমারি থেকেই শুরু করে দিবো।

দুই বছরের জন্য প্রি-প্রাইমারি চালুর কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, প্রি-প্রাইমারি আমরা চালু করি। প্রি-প্রাইমারি এক বছরের জন্য, এখন আমরা সেটা দুই বছরের জন্য করতে চাচ্ছি। পড়াশোনা না, আসবে-যাবে, এক সঙ্গে বসবে, বন্ধুদের নিয়ে খেলাধুলা করবে, ওই খেলাধুলার মধ্য থেকেই তাদের ভেতরে যে সুপ্ত মেধাটা আছে সেই মেধাটা কীভাবে বিকশিত করা যায়। সেই ধরনের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। তাহলেই কিন্তু, এই ছেলে-মেয়ে, এরাই তো ভবিষ্যৎ আমাদের। সেভাবে আমরা তাদেরকে তৈরি করে দিবো।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ, কাজেই কম্পিউটার শেখা আমরা যেমন ল্যাব করে দিচ্ছি, ইনকিউবেশন সেন্টারও করে দিচ্ছি। সেই ভাবে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান জনগোষ্ঠী আমরা গড়ে তুলতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তাহলে আমাদের স্মার্ট সিটিজেন হবে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজ। অর্থাৎ প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি। এই ছোট বেলা থেকে শিশুকাল থেকে ধীরে ধীরে তারা গড়ে উঠবে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। দেশের উন্নয়নে তাদের চিন্তা-ভাবনা, তারা আরও নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি দিয়েই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমি চাই।

আজকের শিশুরা আগামী দিনের কর্ণধার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। যারা একদিন এ দেশের কর্ণধার হবে। এই শিশুদের মধ্য থেকেই একদিন কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, বড় বড় সরকারি চাকুরি করবে, বৈজ্ঞানিক হবে।তিনি বলেন, আজকের শিশুরা আগামীদিনে স্মার্ট বাংলাদেশের পরিচালক হিসেবে পরিচালনার দায়িত্ব তারাই নিবে সেটাই আমাদের আশা।

২০৪১ সালের মধ্যে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং আর ২১০০ সালে ডেল্টা প্ল্যানও করে দিয়েছি। যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম তারা যেন সুন্দর জীবন পায় সেটাই আমার লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষায়-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চায়, খেলাধুলা, সবদিকে যেন উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে। সেটাই আমরা করতে চাই। তার জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছু আমরা করবো।

এ বছর ১৮ ক্যাটাগরিতে মোট ১২৬ শিক্ষার্থী, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ প্রদান করা হয়। যার মধ্যে ৫৪ শিক্ষার্থী, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহমেদ।- বাংলা ট্রিবিউন