বাগমারায় যুবলীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে আ’লীগ নেতা, উত্তেজনা

আপডেট: মে ১০, ২০২৪, ৭:৫৫ অপরাহ্ণ


বাগমারা প্রতিনিধি:


রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারে স্থানীয় যুবলীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি হবিবর রহমান হবির নেতৃত্বে ওই কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয় বলে জানা গেছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে যুবলীগ কর্মী ফিরোজুল ইসলাম যোগীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই ইউনিয়নের শিবদেবপাড়া গ্রামের ফিরোজুল ইসলাম, তার ভায়রা শহিদসহ বেশ কিছু যুবলীগের কর্মী-সমর্থক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ভোট করেন। স্থানীয়ভাবে কালিগঞ্জ বাজারে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে তারা সেখানে যুবলীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করেন। সেখান থেকেই তারা ভোটের প্রচার-প্রচারনা করেন। বিগত সময়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই কার্যালয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে উদ্বোধন করেন যুবলীগ নেতা সোহেল রানা।

এরপর থেকেই ফিরোজুল ইসলাম, শহিদসহ অন্যরা সেখানে নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম করে থাকেন। এলাকায় ফিরোজুল ইসলাম একজন সমাজ হিতৈষী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তারা এমপি কালামের লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত হয়ে ওঠেন। সাংগঠনিক ভাবে তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন স্থানীয় ওয়ার্ড আলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি।

এর জের ধরে সোমবার (৬মে) কালিগঞ্জ বাজারে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে নিয়ে নানা কটূক্তি করেন হবির ভাই মোজাফ্ফর হোসেন। এতে যুবলীগ কর্মী শহিদ প্রতিবাদ জানালে তার উপর ক্ষিপ্ত হয় মোজাফ্ফর। উভয়ের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে হবি, মোজাফ্ফর , তার আত্মীয় জাহাঙ্গীর আলম, মোজাম্মেল হক শহিদের উপর আক্রমণ করে। শহিদ কে উদ্ধারে তার ভায়রা ফিরোজুল এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হবিবর রহমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় কালিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত যুবলীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এরপর থেকেই তারা দলবদ্ধ ভাবে বহিরাগত লোকসহ বাজারের বিভিন্ন স্থানে পাহারা আরম্ভ করে যাতে তাদের ভয়ে তালা খুলতে কেউ না আসে।

উপায়ন্তর না পেয়ে ফিরোজুল ইসলাম বাদি হয়ে যোগীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তালা খুলে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর আবারো সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও ফিরোজুল, শহিদসহ এই গ্রুপের লোকজনকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই আক্রমণ করা হবে এমন কথা বলে কালিগঞ্জ বাজারে পাহারা দিচ্ছে হবিরর রহমান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গ এমন অভিযোগ জানা গেছে। তাদের ভয়ে ফিরোজুল ও শহিদসহ অন্যরা প্রাণ ভয়ে কালিগঞ্জ বাজারে যেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

এব্যাপারে ঝিকরা ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি হবিবর রহমান হবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওইটা কোনো অফিস না। ওখানে বসে ওরা সংগঠনের কাজ করে না। এমপি সাহেবের বিরুদ্ধে আমরা কোনো কটূক্তি করি না। আমরাই তো উনার ভোট করেছি। বরং তারাই মোজাফ্ফর কে মেরেছে। আমরা কাউকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছি না। তবে এসব বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বসতে চেয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে যোগীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। পরে শুনেছি তালা লাগিয়েছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি জানার জন্য আবার সেখানে যাবো। তবে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।