বাদশার ‘কাঁচি’ প্রতীকের প্রচারণায় অন্যরা ম্লান

আপডেট: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নের বৈধতা পেতেই তিক্ত পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়েছিলেন রাজশাহী সদর-২ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। আর এতেই ‘নৌকা’ পেয়ে স্বস্তির হাসি দিয়েছিলেন জোটের ভোটে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে শেষ হাসিটা হাসলেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। হাইর্কোট থেকে মনোনয়নের বৈধতা পেয়ে ‘কাঁচি’ প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন এই প্রার্থী। ওয়ার্ড পর্যায়ে ঘরে ঘরে প্রচারণায় ‘কাঁচি’ প্রতীকের জোয়ারে অন্য প্রার্থীদের প্রচারণা ম্লান হয়ে গেছে।

নগরী ঘুরে ও প্রার্থীদের প্রচারণা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রাজশাহী-২ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত চারজন প্রার্থীকে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এরা হলো- ১৪ দলের ‘নৌকা’র প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা, ‘কাঁচি’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, জাসদের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী (মশাল), জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙল)।

তবে অন্যদের থেকে তিনদিন পরে প্রচারণা শুরু করেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে ‘কাঁচি’ প্রতীকের জোয়ার এনেছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। এরইমধ্যে ‘কাঁচি’ প্রতীকের ভোটের বার্তা নিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া প্রতিদিনই অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা চষে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাইছেন ভোট। ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কথাও বলছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। তার গণসংযোগে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরও ঢল নামছে।

নগরীতে ব্যানার, পোস্টার, মাইকিং, গণসংযোগ ও প্রচার সমাবেশে এগিয়ে রয়েছে ‘কাঁচি’ প্রতীক। অন্যরা তার ধারে কাছেও নেই। এছাড়া ‘মশাল’ প্রতীকের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফজলে হোসেন বাদশার সমর্থকরা ‘নৌকা’ প্রতীকের পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়েও ‘কাঁচি’ প্রতীকের প্রচারণায় জোয়ার ঠেকাতে পারছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীক পেলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তার বিজয় রুখে দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। যা নিয়ে গণমাধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণ ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ দল বসেছেন আলোচনায়। কিন্তু এতেও সুবিধা করতে পারেননি ফজলে হোসেন বাদশা।

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নৌকার পক্ষেই আছে, কেউ নৌকার বিপক্ষে নন। তবে বারবার নৌকা রাজশাহী থেকে ছিনতাই হয়ে যাবে, তাও একজন জনবিচ্ছিন্ন নেতা ছিনতাই করবে, এটা হতে পারে না। নৌকার ভূয়া মাঝি হটাতে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজশাহী-২ আসনের ‘কাঁচি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, বাংলাদেশ সরকার, নির্বাচন কমিশন ও বিশ^ পরিমণ্ডল চাচ্ছে একটা নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আর এই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা আছে। সেই নৈতিক জায়গা থেকেই জনবিচ্ছিন্ন নেতৃত্ব হটিয়ে জনগণের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আমি ‘কাঁচি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছি। প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছি। আর জনসমর্থন থাকায় প্রচারণাও জমে উঠেছে। ব্যাপক সাড়া মিলছে। জনগণের স্বতস্ফূর্ত ভোটের মাধ্যমে আগামী ৭ তারিখে ‘কাঁচি’ প্রতীকের নিরঙ্কুশ জয়ের ব্যাপারেও আমরা আশাবাদী।

এ বিষয়ে ১৪ দলীয় জোটের নৌকার প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
মশাল প্রতীকের জাসদের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী বলেন, আমরা আমাদের মতো করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।