ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের আরেকটি হতাশার পর অস্ট্রেলিয়ার সহজ জয়

আপডেট: জুন ২১, ২০২৪, ৫:২২ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


ম্যাচের প্রথম ওভারেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন তানজিদ হাসান। সেই যে পিছিয়ে পড়ার শুরু আর অস্ট্রেলিয়াকে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার আরেকটি অধ্যায় লেখার পর বোলিংয়েও মেলেনি অভাবনীয় পারফরম্যান্স। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অনায়াস জয়ে সুপার এইট শুরু করল অস্ট্রেলিয়া।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে ২৮ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা ৮ ম্যাচ জিতল তারা। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে এটিই টানা জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১০ ও ২০১২ আসর মিলিয়ে ইংল্যান্ড এবং ২০১২ ও ২০১৪ আসর মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচ জিতেছিল ভারত।

পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৪০ রান করে বাংলাদেশ। পরে দফায় দফায় বৃষ্টির বাগড়া সামলে অস্ট্রেলিয়া ১১.২ ওভারে ২ উইকেটে ১০০ রান করার পর আর খেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি। তখন ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের জয়ী ঘোষণা করা হয়।

চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক করে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক প্যাট কামিন্স। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরে সপ্তম হ্যাটট্রিক এটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষেও সপ্তম হ্যাটট্রিক এটি। আর কোনো দেশ এত বেশি হ্যাটট্রিকের শিকার হয়নি।

কামিন্সের আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাটট্রিক করেন শুধু ব্রেট লি। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেই। এছাড়া এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার আরেক পেসার ন্যাথান এলিসের হ্যাটট্রিকের প্রতিপক্ষও অভিন্ন।

তুলনামূলক ছোট লক্ষ্যে শুরুতেই ফিরতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নার। দ্বিতীয় ওভারে তানজিম হাসানের বলে পয়েন্টে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন তাওহিদ হৃদয়। ৫ রানে বেঁচে যাওয়ার পর আর ভুল করেননি অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনার।

ট্রাভিস হেডের সঙ্গে মিলে দারুণ শুরু এনে দেন ওয়ার্নার। পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। সপ্তম ওভারে বৃষ্টির বাধায় বন্ধ হয় খেলা। বিরতির পর ফিরেই হেডকে বোল্ড করেন রিশাদ হোসেন।

নিজের পরের ওভারে মিচেল মার্শকেও ফেরান রিশাদ। এতে অবশ্য তেমন ফায়দা হয়নি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ওয়ার্নার মিলে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে দ্বাদশ ওভারে পূর্ণ করেন দলের একশ রান। যা জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়।
৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত খেলেন ওয়ার্নার। ৬ বলে ১৪ রান করেন ম্যাক্সওয়েল।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আরও একবার প্রথম ওভারেই ফেরেন তানজিদ। মিচেল স্টার্কের ফুল লেংথ ডেলিভারি তার ব্যাটের নিচে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। পরপর দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন তানজিদ।

শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে রয়েসয়ে ব্যাটিং শুরু করেন লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। জশ হেইজেলউডের দ্বিতীয় ওভারের পুরোটা মেইডেন খেলেন লিটন। পরের ওভারে একই বোলারকে লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন শান্ত।

পঞ্চম ওভারে মিচেল স্টার্কের বলে লিটনের ব্যাট থেকে আসে দুটি চার। তবু স্ট্রাইক রেট তেমন বাড়াতে পারেননি তিনি। পাওয়ার প্লেতে ৩৯ রান করে বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারে পূর্ণ হয় দলের পঞ্চাশ।

অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে বড় শটের খোঁজে বোল্ড হন লিটন। মন্থর ব্যাটিংয়ে ২ চারে ১৬ রান করতে ২৫ বল খেলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। চমক দিয়ে চার নম্বরে নামানো হয় রিশাদকে। তিনিও ফেরেন অল্পেই।

পরে জ্যাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হন শান্ত। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ বলে ৪১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ছয় নম্বরে নেমে হতাশ করেন সাকিব আল হাসানও। ৮ রান করতে ১০ বল খেলে বিদায় নেন তিনি।
একপ্রান্ত ধরে রেখে স্কোর বাড়াতে থাকেন তাওহিদ হৃদয়। ষোড়শ ওভারে মার্কাস স্টয়নিসের বলে তিনি মারেন দুটি ছক্কা।

পরের ওভারে হ্যাটট্রিক করেন কামিন্স। ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে ড্রেসিং রুমে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ ও শেখ মেহেদি হাসান। পরে ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন হৃদয়। ২টি করে চার-ছক্কায় হৃদয় খেলেন ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস।
কামিন্সের হ্যাটট্রিক ছাড়া জ্যাম্পা নেন ২ উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৭ ম্যাচে তার শিকার ১৫ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪০/৮ (তানজিদ ০, লিটন ১৬, শান্ত ৪১, রিশাদ ২, হৃদয় ৪০, সাকিব ৮, মাহমুদউল্লাহ ২, মেহেদি ০, তাসকিন ১৩*, তানজিম ৪*; স্টার্ক ৪-০-২১-১, হেইজেলউড ৪-১-২৫-০, কামিন্স ৪-০-২৯-৩, জ্যাম্পা ৪-০-২৪-২, স্টয়নিস ২-০-২৪-১, ম্যাক্সওয়েল ২-০-১৪-১)
অস্ট্রেলিয়া: ১১.২ ওভারে ১০০/২ (ওয়ার্নার ৫৩*, হেড ৩১, মার্শ ১, ম্যাক্সওয়েল ১৪*; মেহেদি ৪-০-২২-০, তানজিম ১-০-৯-০, তাসকিন ১.২-০-২২-০, মুস্তাফিজ ২-০-২৩-০, রিশাদ ৩-০-২৩-২)
ফল: ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়া ২৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: প্যাট কামিন্স
তথ্যসুত্র: বিডিনিউজ

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ