ভোটের লাইনে ১০ ‘মৃত’! অবাক কাণ্ড মালদহে

আপডেট: মে ৮, ২০২৪, ১:৪৫ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


হাতে ভোটার কার্ড, তবু ভোট দিতে পারলেন না। বুথে গিয়ে জানতে পারলেন, তিনি ‘নেই’! অথচ ফি-ভোটে ভোট দিয়েছেন তিনি। এবার ভোটার তালিকায় তাঁকে ‘মৃত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা দেখে শুধু হতবাকই হননি, তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এমনকী, এনআরসি ভয়ে চোখে পানি চলে আসে বছর পঁয়ত্রিশের গৃহবধূ রাখি দাসের।

ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আতঙ্কিত রাখি দেবী বলেন, ‘এনআরসি চালু হলে এবার আমাদের কী হবে?’ ঠিক একইভাবে ওই বুথে আরো অন্তত ১০ জন ভোটারকে ভোট না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, দুই প্রবীণ নাগরিক অনিমা পোদ্দার (৬২) ও চিত্তরঞ্জন কুন্ডু (৮০)। ভোটার তালিকায় তাঁদের ‘মৃত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ঘটনার মঙ্গলবার (৭ মে) ভোটগ্রহণ চলাকালীন শোরগোল পড়ে যায় মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ইংলিশবাজার পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের গয়েশপুর এলাকায়। এটি ৮৭ নম্বর বুথের ঘটনা।

দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ভোটদান কক্ষে ঢুকে তাঁরা ভোট দিতে পারেন নি। এই ভুল কার, তা নিয়ে শুরু হয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ। যদিও কর্তব্যরত প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়ে দেন, ভোটার তালিকায় তাঁদের নামের পাশে ‘মৃত’ ছাপ রয়েছে। এবার ভোট দিতে পারবেন না তাঁরা। নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে হবে তাঁদের। রাখিদেবী বলেন, ‘আমার স্বামী সরকারি কর্মী। ভোটের ডিউটি করতে গিয়েছেন।

ভোটার তালিকায় কারা আমাকে মৃত বানিয়েছে বুঝতে পারছি না।’ বয়স্ক ভোটার চিত্তরঞ্জন কুন্ডু বলেন, ‘৮০ বছর বয়সেও আমি ভোট দিতে আসছি। কোনো বারই এমন ঘটনা ঘটেনি। এবারই দেখছি, আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এটা প্রশাসনের ভুল। বয়সজনিত কারণে ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারি না। এই পরিস্থিতিতে এখন কীভাবে নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তুলবো তা বুঝতে পারছি না, এব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত।’

জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘ওই এলাকায় বিজেপির ভালো ভোট রয়েছে। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক ভোটারকে তালিকা থেকে নাম কাটা হয়েছে। ১০ জনেরও বেশি ভোটারকে মৃত দেখানো হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে শাসক দল তৃণমূল দায়ী।’ মালদহ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি বাবলা সরকার বলেন, ‘ভোটার তালিকা তৈরির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের। ফলে এতে তৃণমূলের জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।’
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন অনলাইন