মান্দায় বালু দস্যুদের থাবায় নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ১০:১৩ অপরাহ্ণ


মান্দা প্রতিনিধি:নদীপাড়ের উর্বর ফসলি। বছরের আট মাস এসব জমিতে গম, ভুট্টা, আলু, সরিষা, মিষ্টি আলু, মরিচ, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। কিন্ত বালু দস্যুদের কালো থাবায় এরই মধ্যে আত্রাই নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে কৃষকের অন্তত ৫০ বিঘা উর্বর জমি। কৃষকদের অভিযোগ, তাদের উর্বর ফসলি জমি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), এসি ল্যাণ্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকার কৃষকেরা। এরপরও বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অবৈধপস্থায় বালু উত্তোলন করায় তাঁদের ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এলাকার অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর ভাটি অংশের বাইবুল্যা এলাকায় অবৈধভাবে নদীপাড় থেকে বালু উত্তোলন করছেন আরিফ হোসেন নামের এক যুবক।

একইভাবে খুদিয়াডাঙ্গা শ্মশানঘাট, এলেঙ্গা সুইসগেট, পাঁজরভাঙ্গা, ফকিন্নি নদীর ব্রিজ সংলগ্ন পূর্বপাড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। স্থানীয় বাসিন্দদের ভাষ্যমতে, এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদীপাড়ে ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকের আর কোনো জমি থাকবে না। হুমকির মুখে পড়বে আত্রাই নদীর উত্তরতীরের বেঁড়ি বাঁধ। বর্ষা মৌসুমে চরম ঝুঁকিতে পড়বেন নদীপাড়ের শতাধিক পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে বাইবুল্যা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নদীপাড়ের ফসলি জমিতে শ্যালোমেশিনের সাহায্যে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে বালু দস্যুদের লোকজন। এরপর ড্রেজার মেশিন দিয়ে ওইসব বালু কেটে নিয়ে নদীর অপর প্রান্তে নিয়ে জমা করা হচ্ছে। সেখান হতে বিক্রি করা হচ্ছে অবৈধ-পন্থায় উত্তোলন করা এসব বালু। দ্বারিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন অর রশীদ বলেন, বালু ব্যবসায়ীদের বাধা দেওয়ায় গ্রামের লোকজন কয়েকদফা হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁদের এলাকার লোকজন এখন আর ভয়ে কথা বলেন না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলনের নামে কৃষকের ফসলি জমি নিঃশেষ করছে বালু ব্যবসায়ীরা।

একই গ্রামের কৃষক আব্দুল বারী সোনার বলেন, এরই মধ্যে একটি আমবাগান, বনজ বাগানসহ অন্তত ৫০ বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। রহস্যজনক কারণে প্রশাসন বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত বালু ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, বৈধভাবে ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির মুন্সী বলেন, বিষয়টি জেনেছি। যদি নদীর তীর কেটে কেউ মাটি উত্তোলন করে তাহলে তাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।