রাজশাহীতে কোরবানিযোগ্য ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি পশু II উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়তি পশুর দাম

আপডেট: মে ৮, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


পবিত্র ইদুল ফিতর শেষে ঘনিয়ে আসছে পবিত্র ইদুল আজহার দিন। একমাস ৯ থেকে ১০ দিন পরই ইদুল আজহা। এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে কোরবানির পশুর হিসেব-নিকাশ। রাজশাহীর সাপ্তাহিক হাটে গরুর সরবরাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি বাইরের ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে। পাড়া-মহল্লায় গরু ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে। একটু কম দামে গরু পেতে অনেকেই অগ্রিম কোরবানির পশু কিনতে যাচ্ছেন। অধিকাংশই কোরবানির বাজারদর যাচাইয়ে হাটে যাচ্ছেন। তবে শেষ হিসেব নিকাশে যাইহোক, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির পশু গতবারের চেয়েও বাড়তি দামে কিনতে হবে ক্রেতাদের বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর কোরবানির জন্য ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৩৬৫টি, মহিষ ৩ হাজার ৭৬৯টি ও ছাগল ৩ লাখ ৪২ হাজার ৭৫৩টি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে বলে জানানো হয়।

খামারিরা বলছেন, কোরবানির পশুর দাম এবারও চড়া হবে। কারণ উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিদের লাভের পরিমাণ কমবে। তবে কেউ লোকসান করে পশু বিক্রি করবে না। এখন কোরবানির জন্য পশু নিলে কিছুটা কমে বিক্রি হতে পারে। কিন্তু কোরবানির আগে তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পেলে গরু বিক্রি করবেন না।

পবা উপজেলার পশু খামারি তারেক ইসলাম বলেন, তার খামারে ৮ টি মহিষ আছে। ৭ মাস ধরে তিনি এ মহিষ পুষছেন। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার খাবারের দাম বেশি। সঙ্গে আনুসাঙ্গিক সকল খরচ বেড়েছে। কোরবানির ইদের অন্তত ১০ দিন আগে থেকে মহিষ হাটে তুলবেন। তবে এখন থেকেই স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা আসছেন। পশু দেখছেন। কিন্তু কাক্সিক্ষত দাম বলছে না। আর কাক্সিক্ষত দাম ছাড়া পশু বিক্রি করবো না। আশা করছি, ইদের আগে দিয়ে ভালো দাম বলবে।

বছর ধরে কোরবানিকে সামনে রেখে পশু তৈরি করছেন উজ্জ্বল হোসেন। তিনি বলেন, এবারও তার দুইটা ষাঁড় আছে। ওজনে প্রায় ৭-৮ মণের বেশি হবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আসছে। কিন্তু এখন যে দাম বলছে, তাতে খরচ কোনমতে উঠবে। আরও মাস খানেক সময় আছে। কিছু লাভ থাকলে ছেড়ে দিবো।

পবার স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী আইনাল হক বলেন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দু’একটি করে পোষা গরু আছে। খামারের গরুর চেয়ে এসব গরুর চাহিদা ভালো থাকে। ইদের মাস খানেক থাকলেও এখন থেকেই কিছু পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তাই পাড়া-মহল্লায় ঘুরে গরু দেখছি। তবে এবার উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় দামও বেশি।

রাজশাহীর বড় কোরবানির হাট ‘সিটি হাট’ ঘুরে দেখা যায়, অন্য সময়ের চেয়ে সাপ্তাহিক হাটে পশুর সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা আসছেন। তবে এখনো সেভাবে কেনা শুরু করেন নি।

সিটি হাট ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু জানান, সপ্তাহে রোববার ও বুধবার হাট বসে। এখনো কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে এটা বলা যায় না। তবে হাটটা একটু নড়েচড়ে বসেছে। ইদের ১০-১৫ আগে থেকে জমে উঠবে।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন জানান, রাজশাহীতে গতবারের তুলনায়
এবারও পশুর উদ্বৃত থাকবে। আর যেহেতু উৎপাদন খরচ বেশি, এবার দামও কিছুটা বেশি হবে এটা স্বাভাবিক।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ