রাজশাহীতে তীব্র গরমে ভোগান্তিতে শ্রমজীবীরা

আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ণ

রাজশাহীতে তীব্র গরমে ভোগান্তিতে শ্রমজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:


বেশ কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে দিনের তাপমাত্রা গড়ে ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে বিরাজ করছে। এতে নাকাল অবস্থায় সব বয়সীর মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবৃত্ত শ্রেণির মানুষদের। এই শ্রেণির মানুষগুলোকে জীবিকার তাগিদে তপ্ত রোদ ও তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে ঘর ছাড়তে হয়ে থাকে কাজের সন্ধানে।

অসহ্য গরমে অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শপিং মল, মার্কেট কিংবা বাজারেও ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি কম। এমন অবস্থায় অনেকেই পূর্ণ সময়ের বদলে ঘণ্টা চুক্তিতে কাজ করছেন। শ্রমিকদের কেউ কেউ প্রত্যুষে কয়েক ঘণ্টা শ্রম দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে জীবিকায় টান পড়েছে বিভিন্ন শ্রমের মানুষের।

মালিক শ্রমিকরা বলছেন, বেশি টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরমের উত্তাপ সইতে না পেরে কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন তারা। তাদের ভয়, হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। প্রচ- গরমের সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এমন অবস্থায় দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে অনেকেই হাঁসফাঁস করছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তীব্র গরমে নাজেহাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দেখা মিলেছে। পুঠিয়ার বিড়ালদহের আনোয়ার হোসেন। তিনি নগরীতে এসে রাজমিস্ত্রী, মাটি কাটা, বালু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন।

তিনি বলেন, ইদের পর থেকে তেমন কাজ নেই। তারপরে আবার তীব্র তাপদাহ। প্রতিদিন বাড়ি থেকে কাজের সন্ধানে আসছি। আর ফিরে যাচ্ছি। তেমন কাজ পাচ্ছি না। আর পেলেও এক ঘণ্টা কাজ করছে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিতে হয়। কাজের সময় বেশি বিশ্রাম নিলে মালিক রাগ করে। তাই নিজেদেরও খারাপ লাগে।

চারঘাটের নিমার্ণ শ্রমিক বিপ্লব আলী বলেন, বিল্ডিং এর উপরে ইট, বালু তুলতে যে কষ্ট হচ্ছে। তার চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে ছাদের উপরে কাজ করা। রোদের তাপের কারণে ছাদের উপরে টেকা যাচ্ছে না। এক ঘণ্টা কাজ করলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। এসব কারণে মালিকরা তেমন কাজ করাতে চাচ্ছে না।

আবাসন ও নির্মাণ নিয়ে কাজ করা ঠিকাদার শহিদ হোসেন বলেন, ভবনের ভেতরে কাজ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু ভবনের নিচে রড প্রোসেসিং ও সিঁড়ি বেয়ে উপরে তুলতে শ্রমিকদের প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। ছাদের উপরে কাজ করতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় শ্রমিকদের। রোদের মধ্যে কাজের জন্য শ্রমিকরা জ্বর, ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকেই একদিন কাজ করে দুই দিন আসছেনা কাজে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যক্ষেক শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামি কয়েকদিনের মধ্যে রাজশাহীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে তাপমাত্রা খুব বেশি কমার সম্ভাবনা নেই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ