রাবি শিক্ষকদের আন্দোলনে স্থগিত প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম! বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা নিয়েও সংশয়

আপডেট: জুলাই ২, ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক:


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। চলমান বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩০ জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্ম বিরতিতে গেছেন রাবির  শিক্ষকরা।

ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পৃথক তিনটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে বলা হয় ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে । পহেলা জুলাই ভর্তি কার্যক্রম ও সাক্ষাৎকার পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো । সরকারি চাকরিতে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম” প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৷ এর অংশ হিসেবে পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্বক কর্মসূচির আওতায় ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম বর্জন করেছে শিক্ষকরা |

সেজন্যই মূলত এই সিদ্ধান্ত এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে পরীক্ষা চলমান । অনেক বিভাগে জুলাই মাসে পরীক্ষার সময় নির্ধারিত আছে । শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে এসব পরীক্ষা যথাসময়ে হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে । রাবির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোয়েব সাব্বির বলেন, আমাদের ফাইলান পরীক্ষা চলছে । এই পরীক্ষা শেষে আমরা অনার্স ফাইনাল ইয়ারে চলে যাবো । ইদের আগে দুটি পরীক্ষা হয়েছে । আর পরে একটি নেওয়া হয়েছে ।

এখনও দুটি পরীক্ষা বাকি আছে । বুধবার আরও একটি পরীক্ষা হওয়ার কথা আছে । কিন্তু হবে কিনা বিভাগ থেকে এখনও জানানো হয়নি । তিনি আরও বলেন, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলন করছে । কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতি হচ্ছে । আলোচনায় বসে এর সমাধান করা  উচিত । নাহলে আমাদের মতো শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে । রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরুজুমান বানু বলেন, আমাদের এই আন্দোলন সরকার বা আওয়ামী লীগ এমন কোনো বিষয় না ।

এটা শিক্ষকদের অস্তিত রক্ষার বিষয় | প্রধানমন্ত্রী ২৩ সালে সার্বজনীন পেনশন স্কিম ঘোষণা করার সময় বলেছেন যাদের পেনশন নেই তাদের জন্য । উন্নয়নের অংশ হিসেবে তিনি এটা দিয়েছেন । কিন্তু আমরা তো আগে থেকেই পেনশনের আওতায় রয়েছি । হঠাৎ করে আবার কেন আমাদেরও এর আওতায় আনা হলো ।

আমাদের বিরুদ্ধে এটা একটা যড়যন্ত্র ৷ এই স্কিম বাতিল না করলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসতে চাইবে না ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে । এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিভাগের পরীক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মূলত বিভাগের আযাকাডেমিক কমিটি নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সহায়তা করে । তবে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি করা হবে ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতানুল  সলাম বলেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় একই অবস্থা | সব শিক্ষকই আন্দোলনে আছেন । পরীক্ষা নেওয়ার মতো লোকবলও নেই । আন্দোলনকারী শিক্ষাকদের সাথে আমাদের কথা হচ্ছে । সরকারও কথা বলছে । এর দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাকরি | তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও প্রথমবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম নিতে অসুবিধে হবে না । এর আগে, পহেলা জুলাই ২০২৩-২৪ সেশনের স্নাতক প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও সেটা ১৫ জুলাই নির্ধারণ এবং ভর্তি কার্যক্রম সময় ১১ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ