চাঁপাইনবাবগন্জে তীব্র তাপদাহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বিপর্যস্ত জনজীবন

আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৪, ৯:১০ অপরাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:চাঁপাইনবাবগঞ্জে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি মানুষের বাড়তি যন্ত্রণার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। শেষদিকে চৈত্র তার রুদ্র মূর্তি নিয়ে হাজির হয়েছে। অসহনীয় তাপপ্রবাহ আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শহরাঞ্চলে সহনীয় হলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। অনেক সময় ইফতার ও সেহরির সময়ও বিদ্যুৎ থাকে না। অভিযোগ উঠেছে, চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎও পাচ্ছেন না মানুষ।রোজাদার ব্যক্তি ও শিশুরা চরম কষ্টে দিনপার করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটও। গরমে জন-জীবন অতিষ্ঠ। রাতের বেলায়ও বিদ্যুৎ না থাকায় নির্ঘুম রাত কাটছে স্থানীয়দের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মো. শরিফ বলেন, প্রচন্ড তাপদাহ আর লোডশেডিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গ্রামের মানুষ। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে আরেক ঘন্টা থাকেনা। গত ৫-৬ দিন ধরে দিনরাত একই অবস্থা।

সুন্দরপুর এলাকার এনামুল ইসলাম জানান, এতো তাপে গ্রামের টিনশেড ঘরে দিনের বেলায় থাকা কঠিন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এসময় ঘরে থাকা কষ্টকর। স্বস্তির আশায় ঘরে না থেকে আম বাগানের ছায়ায় ছুটতে হয়।

এদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ে প্রভাব পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফসলের মাঠে। জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষক। ফেটে চৌচির ধানের জমি।
কৃষক মতিউর রহমান জানান, তার এলাকায় প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে সেচ কাজে বিঘ্ন ঘটছে প্রতিদিন।

এদিকে, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন পদ্মার চরের কৃষিজীবী মানুষ। তারা মাঠে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। চর এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় কষ্টে আছেন তারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ও শিবগঞ্জের পাঁকা চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের জীবন অনেক কঠিন ও কষ্টকর। বর্ষায় পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়, আবার প্রচণ্ড খরায় কষ্ট করতে হয়। প্রকৃতির বৈরী আচরণের কারণে প্রকৃতি নির্ভর চরের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ছানোয়ার হোসেন জানান, গ্রাহকদের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ৪২ থেকে ৪৫ মেগাওয়াট। চাহিদার অর্ধেক সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সহসাই এ পরিস্থিতির উন্নতি দেখছেন না তিনি। তবে সরকার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতে কাজ করছে বলে জানান ছানোয়ার হোসেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ